বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত রংপুর অঞ্চল

তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত রংপুর অঞ্চল
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

তীব্র দাবদাহে পুড়ছে রংপুর অঞ্চল। অসহনীয় গরম ও ভ্যাপসা আবহাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সর্বত্রই হাঁসফাঁস অবস্থায় রয়েছে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণিকুল। দিন দিন বেড়ে চলেছে সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হিট স্ট্রোকসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। বাসাবাড়ি, অফিস কিংবা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান সবখানেই অস্থিরতা বিরাজ করছে। ঘরে-বাইরে কোথাও মিলছে না স্বস্তি।


গত এক সপ্তাহের টানা দাবদাহে মানুষের পাশাপাশি প্রাণীকুলও ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। রোগতত্ত্ব বিশারদদের মতে, এই সময়ে সাবধানে চলাফেরা করা ও পর্যাপ্ত পানি পান করাই উত্তম। গতকালও রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন ছিল ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সূর্য এখন দীর্ঘসময় ধরে প্রায় খাড়া অবস্থায় রশ্মি ছড়াচ্ছে, ফলে রোদের তীব্রতা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। এই তাপমাত্রা আরও ২/৩ দিন স্থায়ী হতে পারে। বৃষ্টি হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।


রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। বিশেষ করে মেডিসিন ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ তীব্রভাবে বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন, যাদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি। বেডের সংকটে অনেক রোগীকে ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফলে চিকিৎসক ও নার্সরা চরম চাপের মুখে পড়েছেন।


অবিরাম দাবদাহের কারণে শহর ও গ্রামের রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারগুলোতে মানুষের চলাচল কমে গেছে। দুপুর গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রোদের তীব্রতা বাড়তে থাকে এবং রাত অবধি তা অব্যাহত থাকে। এমনকি ফ্যান চালিয়েও গরম থেকে মুক্তি মিলছে না। ফ্যানের বাতাসও গরম হয়ে যাচ্ছে। গত প্রায় ২০ দিন ধরে এই অঞ্চলে কোনো বৃষ্টি হয়নি। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে দিনমজুর, রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমজীবী মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। কাজ করতে না পারায় এসব পরিবারে নেমে এসেছে মানবিক বিপর্যয়।


কৃষি শ্রমিকরা জানান, তীব্র রোদের কারণে ক্ষেতে-খামারে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শরীরে ফোস্কা পড়ে যাচ্ছে। একটু স্বস্তির আশায় তাঁরা বারবার গাছের ছায়ায় ছুটে যাচ্ছেন।


রংপুর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই বৈরী আবহাওয়ায় জ্বর, সর্দি, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, হিট স্ট্রোক ও ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেয়। এই ধরনের আবহাওয়া জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এসময় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন যতটা সম্ভব ছায়ায় অবস্থান করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।


তীব্র দাবদাহ ও গরমের কারণে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে। ওয়ার্ডে জায়গা না থাকায় ফ্লোরেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে হাসপাতালের ভেতরেও গরমের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে, যা রোগীদের জন্য বাড়তি কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন