যমুনায় মাছ ধরতে মাসোহারা দিতে হয় চৌহালী নৌ-পুলিশের ওসিকে


সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীতে মাছ ধরতে জেলেদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে চৌহালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ না দিলে জেলেদের জাল জব্দ করা হয়, তবে অর্থের বিনিময়ে তা আবার ফেরত দেওয়া হয়।
জানা গেছে, যমুনা নদীতে অবৈধ জাল ব্যবহার বন্ধে উপজেলা মৎস্য দপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হলেও, বিপরীতে নৌ-পুলিশ কিছু জেলেদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে মাসিক অর্থ আদায় করছে। অভিযোগ অনুসারে, প্রতি জেলে থেকে ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে জানান, “যমুনায় মাছ ধরতে হলে ওসি মিজান স্যারকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে জাল ধরে নিয়ে যায়, তবে টাকা দিলে জাল ফেরত দেয়।” তারা আরও জানান, বেশিরভাগ সময় বিকাশের মাধ্যমে অর্থ নেয়া হয়, কখনো ওসি নিজেই টাকা নেন, আবার কখনো তার সোর্স এর মাধ্যমে নেন।
সম্প্রতি একটি ঘটনায় দেখা যায়, নৌ-পুলিশ টহলে গিয়ে নদী থেকে ১০টি চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করে। অভিযোগ রয়েছে, পরবর্তীতে ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে ৫টি জাল ফেরত দেয়।
এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। ফুটেজে দেখা যায়—ওসি গাজী মিজানুর রহমান উপজেলা সদরের একটি বিকাশ দোকানে গিয়ে খামে করে টাকা নিচ্ছেন। এছাড়া আরও একটি ছবিতে তাকে সরাসরি এক জেলের কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা গেছে।
জোতপাড়া বাজারের বিকাশ এজেন্ট আব্দুর রহিম বলেন, “ওসি সাহেব আমাকে বলেন খামে ভরে টাকা দিতে, আমি তাই দিয়েছি। টাকার উৎস বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে কয়েকদিন আগে একটি জাল ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে তিনি আমার মাধ্যমে এক জেলের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা নিয়েছিলেন।”
এ বিষয়ে চৌহালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ওসি গাজী মিজানুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে টাংগাইল অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা বলেন, অন্যায় যেই করুক সেটা অন্যায়। সে এ ধরনের অনৈতিক কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈএনকে/জে .আ
