ভোলার হাসপাতালের করুণ চিত্র


ভোলার ৭ উপজেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষের চিকিৎসার শেষ আশ্রয়স্থল ভোলা জেলা শহরের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। তবে এ সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র যেন দিন দিন রোগ নিরাময়ের জায়গা থেকে রোগ বিস্তারের উৎসে রূপ নিচ্ছে। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তেলাপোকা ও ছারপোকার উপদ্রব এতটাই ভয়াবহ যে, অনেক সময় নার্সরাও রোগীদের কাছে আসতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড, গাইনি, পুরুষ মেডিসিন ও অন্যান্য ওয়ার্ডে রোগী ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ ভর্তির পাশাপাশি প্রতিটি শয্যার নিচে, দেয়ালের টাইলসের ফাঁকে ও মেঝেতে পোকামাকড়ের অবাধ বিচরণ। রোগীরা দিনের চেয়েও বেশি ভোগান্তিতে পড়েন রাতের বেলায়। পোকার কামড়, নষ্ট খাবার, আর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ যেন রোগীদের কষ্ট বাড়িয়ে দিচ্ছে।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল মতিন ও বিবি রহিমা বলেন, হাসপাতালে এসেছি সুস্থ হতে, কিন্তু এখন আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। পোকামাকড়ের যন্ত্রণা আমাদের ঘুমাতে পর্যন্ত দেয় না।
একই অভিযোগ সদর উপজেলার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ ও মো. মনির হোসেনের। তারা বলেন, রাতে তেলাপোকা এসে কামড়ায়। খাবারে ঢুকে পড়ে পোকা, তা আবার বাধ্য হয়ে খেতে হয়।
নারগিছ বেগম ও সুরমা আক্তার বলেন, এখানে সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা, রোগীরা যেন আরও বেশি অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়ছেন।
ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত স্বামীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া জান্নাত বেগম বলেন, তেলাপোকার এত উপদ্রব যে, নার্সদের ডাকলেও তারা বেডে আসতে চান না। জরুরি সেবাও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তায়েবুর রহমান বলেন, তেলাপোকা নির্মূলে ইতোমধ্যে স্প্রে ব্যবহার শুরু হয়েছে। রোগীর চাপ থাকায় ধাপে ধাপে ওয়ার্ড খালি করে ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে। ২ সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা অনেকাংশে সমাধান হবে বলে আশা করছি।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ অনুযায়ী, পোকামাকড় এবং অপরিচ্ছন্নতা বর্তমানে ভোলা জেনারেল হাসপাতালের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি রোগী মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
