আজও বন্ধ নগরভবন, প্রধান ফটকে ইশরাক সমর্থকরা


শুক্র ও শনিবারের বিরতির পর রোববার (আজ) আবারও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে জড়ো হয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে দাবি করা তার অনুসারীরা।
‘ইশরাক ইশরাক’ স্লোগানে আজও মুখর হয়ে উঠেছে নগর ভবনের প্রাঙ্গণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দক্ষিণ সিটির প্রধান ফটক বন্ধ রাখা হয়েছে।
রোববার (২২ জুন) ঢাকাবাসীর ব্যানারে ছোট বড় মিছিল নিয়ে নগর ভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের সমর্থকরা। নগর ভবনের প্রাঙ্গণের সিঁড়িতে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। পাশাপাশি ডিএসসিসির বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট বড় মিছিল এসে একত্রিত হচ্ছে আন্দোলন স্থলে।
গত কয়েকদিন ধরে ৭০টি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা কর্মী, পরিদর্শক, ওয়ার্ড সচিব, এডিস মশা ও করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।
গত ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। জরুরি প্রয়োজনে এসে সেবাপ্রার্থী নাগরিকদের বারবার ঘুরে যেতে হয়েছে। সেই সময় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ইশরাকপন্থি কর্মচারীরা নগর ভবনের মূল ফটক আটকে রাখার পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগে তালা ঝুলিয়ে সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে রাখেন। পরে ঈদের বিরতির পর গত ১৫ জুন থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ফের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেন।
অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেছিলেন, জন্ম নিবন্ধন সনদসহ দৈনন্দিন জরুরি সেবা চালু থাকবে, অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা কর্মকর্তারা অফিস করতে পারবেন না। প্রধান ফটকের তালা খোলা হবে না, এটা আন্দোলনের একটা প্রতীক। জনগণের দৈনন্দিন সেবা, আমাদের তত্ত্বাবধানে চালু থাকবে।
এরই ধারাবাহিকতায় আজও নগর ভবনে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন ইশরাকপন্থিরা। তারা ইশরাকের নামে নানা স্লোগান দিচ্ছেন। ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমার ভুলি নাই’ এমন স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সেসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলনে নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
