যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলকে সহায়তা মানেই মৃত্যুদণ্ড!


ইরানের পার্লামেন্ট নতুন একটি কঠোর আইন অনুমোদন করেছে, যেখানে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্য কোনো শত্রু রাষ্ট্রকে সহায়তা করলে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া স্টারলিংকের মতো অননুমোদিত ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারের বিষয়টিও আইনের আওতায় এনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) ইরানি গণমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আইনটি ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা এবং সাইবার নিরাপত্তা রক্ষার অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে পাস করা হয়েছে।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, ইরানের নিরাপত্তার ক্ষতি করতে পারে এমন যেকোনো রাষ্ট্র, গোষ্ঠী বা সংস্থাকে তথ্য বা প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হলে দোষী ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত শাস্তি দেওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে, লাইসেন্সবিহীন স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ব্যবহার – বিশেষ করে স্টারলিংক – নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান সরকার দেশজুড়ে নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে, বিশেষ করে চলমান অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্তর্জাতিক চাপের প্রেক্ষাপটে।
এই আইনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা ‘পৃথিবীতে দুর্নীতি’ হিসেবে বিবেচিত হবে, যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
আইনের ভাষায় বলা হয়েছে, ‘‘ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্য কোনো শত্রু রাষ্ট্র ও গোষ্ঠী বা তাদের এজেন্টদের হয়ে গোয়েন্দা বা কোনো ধরনের অপারেশন পরিচালনা করা, যা দেশের নিরাপত্তা বা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, তা ‘পৃথিবীতে দুর্নীতি’র শামিল এবং এর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।’’
আইনটিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলকে সমর্থন, শক্তিশালীকরণ, বৈধতা প্রদান বা এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ সহায়তা প্রদানকারীকেও মৃত্যুদণ্ডের আওতায় আনা হবে। এ সহায়তা নিরাপত্তা, সামরিক, অর্থনৈতিক, আর্থিক কিংবা প্রযুক্তিগত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ঘটতে পারে।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আইন না মানলে জরিমানা, বেত্রাঘাত ও দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে বলে উল্লেখ রয়েছে এই আইনে।
এ ছাড়া অনুমোদনহীন ইন্টারনেট যোগাযোগ ডিভাইস ব্যবহার, আমদানি, বেচাকেনা বা বিতরণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনটি পাসের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, সাইবার অপরাধ ও বিদেশি গোয়েন্দা কার্যক্রমে জড়িতদেরকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।
