দুই ইনিংসেই ব্যাটিং ব্যর্থতা, ইনিংস ব্যবধানে সিরিজ হার বাংলাদেশের


তৃতীয় দিনের শেষে যে পরাজয়ের আশঙ্কা ঘনিয়ে উঠেছিল, চতুর্থ দিনের সকালে তা বাস্তবেই রূপ নেয়। মাত্র ৩৪ বল টিকতে পেরেছে বাংলাদেশ, শেষ হলো ম্যাচ। দ্বিতীয় ইনিংসে ভয়াবহ ব্যাটিং ব্যর্থতায় ইনিংস ও ৭৮ রানে হার মানল টাইগাররা।
গল টেস্ট ড্র হলেও কলম্বোতে জয়ের মাধ্যমে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।
কলম্বো টেস্টের ভাগ্য কার্যত নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল আগের দিনই। গলে ব্যাট হাতে যে দলটা আত্মবিশ্বাস ছড়িয়েছিল, কলম্বোয় সেই দলটাই যেন ছায়া হয়ে পড়ে থাকল। টানা ব্যর্থতায় ধসে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংস, ব্যাটাররা একের পর এক ফিরেছেন খালি হাতে।
প্রথম ইনিংসে ২১১ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে গতকাল তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১১৫ রান করেছিল বাংলাদেশ। তখনো ৯৬ রানে পিছিয়ে ছিল সফরকারীরা। হাতে উইকেট ৪টি। ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে অসম্ভব কিছুই করতে হতো বাংলাদেশকে।
একমাত্র আশা ভরসা ছিলেন লিটন দাস। শেষ স্বীকৃত ব্যাটারও তিনি। তবে তিনি আজ ফিরলেন এদিন মাত্র চার বল খেলেই। ৪০ তম ওভারে প্রবাথ জয়াসুরিয়ার বল লিটনের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে উইকেটকিপার কুশল মেন্ডিসের গ্লাভসে। ৪৩ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন। এরপর মুহূর্তেই যেন সব শেষ। একে একে বিদায় নেন নাঈম, তাইজুল ও এবাদত। টপঅর্ডারের দেখানো পথেই হাঁটলেন যেন সবাই। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস।
এর আগে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ২৪৭ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। জবাবে পাথুম নিশাঙ্কার ১৫৮ রানের ইনিংসে ভর করে ৪৫৮ রানের বড় স্কোর গড়ে স্বাগতিকরা।
২১১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ভুগেছে। গলে দুই ইনিংসে ব্যর্থ ছিলেন এনামুল হক বিজয়। তবুও এই ওপেনারকে কলম্বোতে আরেকটা সুযোগ দেয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে এবারও ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারেননি তিনি।
ইনিংস ওপেন করতে নেমে নতুন বলে নিজের সঙ্গেই লড়াই করেন বিজয়। এবার নিজেদের ব্যাটিংয়ের ধরণ পাল্টে অনেকটাই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করার চেষ্টা করেন। তাতে কিছু বাউন্ডারি পেলেও আত্মবিশ্বাস ফিরে পাননি। ১৯ রান করে বিজয় ফেরায় ভাঙে ৩১ রানের উদ্বোধনী জুটি।
বিজয়ের ৩ বল পরই ফেরেন আরেক ওপেনার সাদমান। তার ব্যাট থেকে যোগ হয় ১২ রান। তিনে নামা মুমিনুল হকও ব্যর্থ ছিলেন। ১৫ রানের বেশি করতে পারেননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।টপ অর্ডার ব্যর্থতার পর আশা দেখিয়েও পথ দেখাতে পারেনি মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। শান্ত-মুশফিকরা উইকেটে থিতু হওয়ার পর উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। ৪৮ বলে ১৯ রান করেন শান্ত। ৫৩ বলে ২৬ করেন মুশফিক। ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন মেহেদি হাসান মিরাজও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৪৭
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৪৫৮
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ১১৭/৬) ৪৪.২ ওভারে ১৩৩ (লিটন ১৪, নাঈম ৫, তাইজুল ৬, এবাদত ৬, নাহিদ ০*; আসিথা ৮-১-২২-১, ভিশ্ব ৬-৩-১৬-০, জয়াসুরিয়া ১৮-২-৫৬-৫, ধনঞ্জায়া ৪-১-১৩-২, দিনুশা ৩-১-৭-০, রত্নায়াকে ৫.২-০-১৯-২)
ফল: শ্রীলঙ্কা ইনিংস ও ৭৮ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: পাথুম নিশাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা)।
সিরিজসেরা: পাথুম নিশাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা)।
