শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

শিল্পনগরীতে চিকিৎসায় ৯২ শতাংশ দরিদ্র মানুষের ভরসা ফার্মেসি

শিল্পনগরীতে চিকিৎসায় ৯২ শতাংশ দরিদ্র মানুষের ভরসা ফার্মেসি
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পুরোনো ও বৃহৎ শিল্পনগরী খুলনা। এই নগরীর ৯২ শতাংশ দরিদ্র মানুষ সাধারণ রোগ-বালাই ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ওষুধের দোকানের ওপর নির্ভরশীল। এ ছাড়া শারীরিকভাবে অক্ষম ৯৬ দশমিক ১ শতাংশ সম্পূর্ণভাবে থাকেন চিকিৎসার বাইরে।

সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে গবেষণালব্ধ এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান কনসার্ন’র সহযোগিতায় খুলনা নগরীর স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে এ গবেষণা পরিচালনা করে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার-পিপিআরসি এবং জেজেএস।

পিপিআরসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. হাসানাত মো. আলমগীর। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, খুলনা নগরীর ৯০ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পানির প্রাথমিক উৎস চাপকল। তবে ৫৭ শতাংশ মানুষ পানির অন্যান্য উৎস ব্যবহার করে থাকেন। ৫৯ শতাংশ নগরবাসী পারিবারিক বর্জ্য পাশের ড্রেন বা নালাতে ফেলেন। 

এ ছাড়া মাত্র ৩১ শতাংশ নগরবাসী শিশুদের চিকিৎসায় শিশু হাসপাতালে যান, প্রসব সেবা পেতে মাত্র ২৫ শতাংশ নগরবাসী নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং এনজিও পরিচালিত সেবা কেন্দ্রে গিয়ে থাকেন। জটিল ও গুরুতর রোগের চিকিৎসায় ২৬ শতাংশ মানুষ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে থাকেন এবং ১৩ শতাংশ যান বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে। 

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ন্যূনতম চিকিৎসা পেতে খুলনা নগরীর একজন দরিদ্র মানুষকে চিকিৎসকের পেছনে ব্যয় করতে হয় ৩৪১ টাকা, ওষুধের পেছনে ব্যয় হয় ২ হাজার ১৭৬ টাকা, পরীক্ষা–নিরীক্ষায় ব্যয় হয় ১ হাজার ৭৪৪ টাকা, সাধারণ অস্ত্রোপচারে ব্যয় হয় ১ হাজার ৯১২ টাকা, চিকিৎসা সংক্রান্ত যাতায়াত বাবদ ব্যয় হয় ৩১২ টাকা এবং অন্যান্য ব্যয় রয়েছে ৯৬ টাকা। 

এই শিল্পনগরীতে সাধারণ অসুস্থতায় রোগী প্রতি গড় ব্যয় ৬ হাজার ৫৮১ টাকা। চিকিৎসা গ্রহণে ৩০ শতাংশের বেশি মানুষকে সহযোগিতা নিতে হয়, ধার করে চিকিৎসা ব্যয় বহন করেন ২০ শতাংশ মানুষ, প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ চিকিৎসার জন্য সুদে টাকা নিতে বাধ্য হন এবং প্রায় ৫ শতাংশ মানুষকে স্থায়ী সম্পদ বিক্রি বা বন্ধক রাখতে হয়। 

ড. হোসেন জিল্লুর বলেন, ‘আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে দেশের স্বাস্থ্য সেবা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে আছে। নগর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’ 

এ সময় আরও বক্তব্য দেন সাবেক খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্বপন কুমার হালদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামীদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাক্তন মহাপরিচালক এম এ ফয়েজ, বিআইএইচএস এর প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী, আরবান হেলথ নেটওয়ার্কের সদস্যসচিব শামীম তালুকদার প্রমুখ।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন