ঘন ঘন ঢেকুর উঠছে? কারণ ও প্রতিকার জানালেন বিশেষজ্ঞ


ঢেকুর তোলা অনেকেরই অভ্যাসের মতো হয়ে উঠেছে। ঘুম ভাঙার পর থেকে শুরু করে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত মাঝে মধ্যেই অনেকের ঢেকুর উঠে। হঠাৎ করে ঢেকুর উঠলে যেমন সমস্যা মনে হয়, বিপরীতে যাদের প্রতিদিনই ঢেকুর উঠে, তারা এটাকে অভ্যাসের মতো মানিয়ে নিয়ে থাকেন। কিন্তু ঢেকুর উঠার জন্য বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতেও পড়তে হয় আমাদের।
সাধারণত হঠাৎ কোনো কারণে ঢেকুর উঠতে পারে। কিন্তু বারবার ঢেকুর উঠলে সেটি হয়তো শরীরের ভেতরের কোনো সমস্যার ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসক ডা. রাজলক্ষ্মীর ভাষ্য অনুযায়ী ঢেকুর উঠা নিয়ে কথা বলেছেন। তাহলে এ ব্যাপারে এবার জেনে নেয়া যাক।
অতিরিক্ত বাতাস গিলে ফেলা:
অনেকেই দ্রুত খাবার খান বা পান করেন বা কথা বলেন। এ সময় পরিপাকতন্ত্রে বাতাস ঢুকে যায়। এই প্রবেশকৃত বাতাস শরীর ঢেকুরের মাধ্যমে বের করে দেয়।
হজমজনিত সমস্যা:
সঠিকভাবে খাবার হজম না হলে পেটে গ্যাস জমে। যা থেকে পরবর্তীতে ঢেকুর উঠে।
গ্যাস উৎপাদনকারী খাবার খাওয়া:
- মটরশুঁটি, বাঁধাকপি, কার্বনেটেড ড্রিংকস ইত্যাদি খাবার পেটে গ্যাস উৎপন্ন করে। ফলে অনেক সময় ঢেকুর উঠার মতো সমস্যা হয়।
- মানসিক চাপ বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স:
- অ্যাসিডিটি বেশি থাকলে বা স্ট্রেসে ভুগলেও ঢেকুর উঠার প্রবণতা অনেক বেশি হয়ে থাকে।
ঢেকুরের ধরন থেকে শারীরিক জটিলতার ইঙ্গিত:
- দুর্গন্ধযুক্ত ঢেকুর: ঢেকুর যদি দুর্গন্ধযুক্ত হয় তাহলে এটা স্পষ্ট যে, পচা খাবার বা গ্যাসট্রিক ইনফেকশনের লক্ষণ।
- টক ঢেকুর: অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা গ্যাস্ট্রাইটিসের ইঙ্গিত দেয় টক ঢেকুর।
- শব্দহীন ঢেকুর: শব্দহীন ঢেকুর সাধারণত শুধুই বাতাস বের করে শরীরের ভেতর থেকে।
ঘরোয়া প্রতিকারে পরামর্শ:
- ভাজা বাদাম: গ্যাস শোষণ করে হজমে সহায়তা করে।
- গুড়: প্রতিদিন খাবার খাওয়ার পর অল্প পরিমাণ গুড় খাওয়া হলে হজম ভালো হয় এবং ঢেকুর উঠা কমে।
- ধীরে পান করা: তরলজাতীয় কিছু পানের সময় একসঙ্গে অনেকটা পান করার অভ্যাস বাদ দিন। সময় নিয়ে ধীরে ধীরে পান করুন।
- মৌরি বা জিরা পানি: হজম ও গ্যাস কমাতে মৌরি বা জিরা পানি পান করুন।
কখন চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে:
ঢেকুর উঠার সঙ্গে সঙ্গে যদি পেট ব্যথা বা গ্যাসের চাপ অনুভব হয়। ঢেকুরের সঙ্গে ওজন হ্রাস পাওয়া, বমি হওয়া বা অরুচি দেখা দিলে। প্রতিদিন সকালে বা রাতে ঘুমানোর আগে বেশি ঢেকুর হলে এবং ঢেকুরের সঙ্গে মুখে টক বা তেতো স্বাদ থাকলে কালক্ষেপণ না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে।
প্রসঙ্গত, ঢেকুর একটি সাধারণ শারীরিক প্রতিক্রিয়া হলে এটি ঘন ঘন বা অস্বাভাবিক হলে সতর্ক হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। খাওয়ার অভ্যাস ও কিছু ঘরোয়া উপায়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ঢেকুর। তবে অস্বাভাবিকতা থাকলে অবহেলা না করে গ্যাস্ট্রো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।
দৈএনকে/জে .আ
