শিশুর খাবারে লবণ-চিনি কখন দেওয়া নিরাপদ? জানালেন পুষ্টিবিদ


শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তাদের শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লবণ ও চিনির ব্যবহার শিশুদের জন্য সীমিত হওয়া উচিত। কারণ, এসব অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হলে শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
শিশুদের খাবারে কখন এবং কতটুকু লবণ ও চিনি দেয়া উচিত, তা নিয়ে চ্যানেল 24 অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন নেসলে বাংলাদেশের নিউট্রিশন কনসালটেন্ট আঁখি গুপ্তা। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
লবণ (Salt):
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) শিশুর শরীরে অতিরিক্ত লবণের ব্যবহার নিষেধ করেছেন। অতিরিক্ত লবণ কিডনি এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
লবণ দেয়ার সময় ও পরিমাণ:
- ০-৬ মাস: এই বয়সে লবণ না দেয়াই উত্তম। মাতৃদুগ্ধ বা ফর্মুলা মিল্কে শিশুর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ থাকে।
- ৭-১২ মাস: শিশুদের কিডনি যথাযথভাবে কাজ শুরু করেনি, তাই এই সময়ও লবণ না দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
- ১-৩ বছর: এই বয়সে দিনে ১ গ্রাম পর্যন্ত লবণ দেয়া যেতে পারে (এলসিডি অনুযায়ী)।
- ৪-৮ বছর: এই বয়সে ১.৫ গ্রাম পর্যন্ত লবণ খাওয়ানো যেতে পারে।
চিনি (Sugar):
অতিরিক্ত চিনি শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ জন্য সবসময় বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিনি দিতে হবে শিশুদের।
চিনি দেয়ার সময় ও পরিমাণ:
- ০-১২ মাস: এই বয়সে শিশুকে কোনো প্রকার চিনি দেয়া উচিত নয়। প্রাকৃতিক শর্করা (ফলমূলের মধ্যে থাকা চিনি) যথেষ্ট।
- ১-২ বছর: কিছু প্রাকৃতিক চিনি দেয়া যেতে পারে, তবে প্রক্রিয়াজাত চিনি থেকে দূরে থাকা উচিত।
- ৩ বছর এবং তারপর: প্রাকৃতিক চিনি যেমন ফলমূল ও শস্য থেকে চিনি দেয়া যেতে পারে, তবে ক্যান্ডি ও অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত চিনি পরিহার করা উচিত।
কেন লবণ ও চিনি সীমিত পরিমাণে দেয়া উচিত:
শিশুদের শরীরের সঠিক বৃদ্ধি এবং শক্তির জন্য পুষ্টিকর খাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত লবণ এবং চিনি তাদের কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং দাঁতের ক্ষয় তৈরি করতে পারে। ফলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যা জানা প্রয়োজন:
শিশুদের খাবারে লবণ এবং চিনির পরিমাণ সীমিত রাখতে হবে, বিশেষত তাদের প্রথম কয়েক বছরের মধ্যে। স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য
দৈএনকে/জে .আ
