লক্ষ্মীপুরের বিশ তরুনের খোয়াই নদীভিযান


লক্ষ্মীপুরের বিশ তরুন যোগ দিয়েছিলো সিলেটের আলোচিত সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার সুমনের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে। কেমন ছিলো তাদের পরিচ্ছন্নতার পথযাত্রা। লক্ষ্মীপুর থেকে সে গল্প তুলে ধরেছেন- জিহাদ হোসেন রাহাত। ফরহাদ হোসেন, আব্দুর রহমান রানা, ইমন হোসেন, মাহমুদুন্নবী রাছেল, মনির হোসেন, দুর্জয়, মোঃ তামিম হোসেন, রাহাত হোসেন, সুমন হোসেন ও মোবারক হোসেনসহ বিশ জনের একটি টিম কাজ করেছিলো ব্যারিষ্টার সুমনের এলাকায়। তারা সবাই বিডি ক্লিন নামীয় আলোচিত সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। সিলেটের খোয়াই নদী থেকে ফিরে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে আজকের পর্বে।
প্রশ্ন- যাত্রাপথ কেমন ছিলো?
মনির- আমরা বাসযোগে সিলেটে গিয়েছি। যাত্রা পথে বাসের মধ্যকার খোশগল্প আর পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পরিকল্পনা ছিলো আমাদের আলোচ্য বিষয়।
প্রশ্ন- পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরুর অনূভুতি কেমন ছিলো?
তামিম- খুবই সুন্দর একটি সকাল ছিলো সেদিন। আমি এবং আমার লক্ষ্মীপুরের সহযাত্রীরা টিমভুক্ত হয়ে মন দিয়ে কাজ করেছি।
প্রশ্ন- মুলত কোথায় চালিয়েছেন পরিচ্ছন্নতার কাজ?
মোবারক- আমরা আসলে কাজ করেছি খোয়াই নদীতে। সেখানকার জঞ্জাল পরিস্কার করে পানি প্রবাহের সুযোগ করতেই কাজ শুরু করি আমরা।
প্রশ্ন- পুরো দিনের কাজ কেমন উপভোগ করেছেন?
ফরহাদ- আসলে কাজটি তেমন কঠিন ছিলোনা। ব্যারিষ্টার সুমন স্যারের উৎসাহ আর সাহস দেখে পুরো দিনটি কিভাবে কাটলো কল্পনাও করতে পারিনি।
প্রশ্ন- মোট কতজন মিলে কাজ করেছিলেন?
রানা- লক্ষ্মীপুর থেকে আমরা বিশজন ছিলাম। বিডি ক্লিনের সহকর্মী ছিলেন ছয় শতাধিকেরও বেশি।
প্রশ্ন-ফেরার মুহুর্ত কেমন ছিলো?
ইমন- প্রকৃতপক্ষে স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পেরেছিলাম ফেরার মুহুর্তে। একটি নদীর প্রাণ ফিরিয়ে দেয়ার কাজ করতে পেরে খুবই ভালো লেগেছিলো।
''লক্ষ্মীপুরের বিশ তরুনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময়ের খরস্রোতা খোয়াই নদীতে নৌকা চলত, জেলেরা মাছ ধরতেন। এটি কালের আবর্তে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। নদীতে মাছ নেই, ময়লা-আবর্জনায় পানি বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। এমনকি নদীর দুইপাশ দখল করে গড়ে উঠেছে বাসাবাড়ি ও দোকানপাট। একদিকে যেমন অবৈধ দখল, অপরদিকে পৌরসভার ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিলো এই নদী।
'লক্ষ্মীপুর টিমের তামিম হোসেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিনের প্রধান সমন্বয়কারী জহিরুল ইসলাম রবির বরাত দিয়ে বলেন, 'আমাদের মূলমন্ত্র "পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের স্বপ্ন"-এই মন্ত্র নিয়েই আমরা এই কাজগুলো করছি। প্রায় ৭০০ স্বেচ্ছাসেবক এখন খোয়াই নদী পরিষ্কার করার জন্য কাজ করেছি।
তামিম আরো জানায়, ১৯৭৮-৭৯ সালে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে খনন করে উপজেলার খোয়াই নদীকে শহরের বাইরে স্থানান্তর করা হয়। এরপর নদীটির প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অংশ মরা খোয়াই নদী হিসেবে পায় পরিচিতি। ধীরে ধীরে দখল ও দূষণের কবলে ক্রমেই মৃত নদীতে পরিণত হয় খোয়াই। নদীতে পানিপ্রবাহ না থাকায় ব্যারিষ্টার সুমন স্যারের আহবানে কাজে নামি আমরা বিডি ক্লিন কর্মীরা। জানা যায়, ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রওনা হয়ে ২০ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুরে ফেরে বিডি ক্লিনের সদস্য পরিচিত লক্ষ্মীপুরের লক্ষ্মী সন্তানরা।
