কাশ্মীর হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমানায় উত্তেজনা


ভারতের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পর্যটননগরী পহেলগামে সশস্ত্র হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা পর্যটকদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। আহত হয়েছেন আরও অনেক। ২০১৯ সালের পর এটিই উপত্যকার সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।
ঘটনার দায় স্বীকার করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’। তারা জানায়, বহিরাগতদের বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে। তবে ভারতের পুলিশের দাবি, পাকিস্তানপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো এর পেছনে রয়েছে।
ভারতের সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ‘দৃঢ় প্রতিক্রিয়া’র দাবি তুলেছেন। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালায়, যার জেরে দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের পর ভারত সরকার দাবি করেছিল, সেখানে সহিংসতা অনেকটাই কমেছে এবং পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে এই হামলা সে দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পহেলগামে হিন্দু তীর্থযাত্রা 'আমরনাথ যাত্রা' শুরু হওয়ার কথা—এই হামলায় সেই আয়োজন নিয়েও নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নজর কাড়া এবং কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলাই ছিল উদ্দেশ্য। এর আগেও ২০২৪ সালের জুনে তীর্থযাত্রীদের একটি বাস গিরিখাতে পড়ে নয়জন নিহত হন, যা সন্ত্রাসী হামলার ফল বলেই ধারণা করা হয়।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনীর কাশ্মীরকে ‘শিরার ধমনীর সঙ্গে যুক্ত’ বলে উল্লেখ করে বলেছেন, "আমরা কাশ্মীরিদের ন্যায্য দাবির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
কাশ্মীর আবারও পরিণত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই হামলার পর ভারতের নিরাপত্তা জোরদার হচ্ছে এবং অঞ্চলজুড়ে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা।
