সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে টানা ৮ দিন ধরে গোলাগুলি
.jpg)

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর টানা অষ্টম রাতেও ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতেও দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।
টানা আট রাত ধরে চলা এই সংঘর্ষে সীমান্ত অঞ্চলে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুই দেশের সেনাবাহিনী পরস্পরকে সংঘর্ষের জন্য দায়ী করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে এবং অনেক পরিবার নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
অবশ্য ভারতীয় গণমাধ্যমে গোলাগুলির বিষয়ে বরাবরের মতো পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হলেও গতকাল রাতের ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বা দেশটির সংবাদমাধ্যমে এখনও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর পাকিস্তান সেনাবাহিনী টানা অষ্টম রাতেও বিনা উসকানিতে গুলি চালিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন চৌকি থেকে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়। এই গুলির লক্ষ্য ছিল কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, নওশেরা ও আখনুর—জম্মু ও কাশ্মীরের এই এলাকাগুলোর বিপরীতে থাকা ভারতীয় পোস্টগুলো। ভারতীয় সেনাবাহিনীও এই ৭৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে।
গোলাগুলি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন এপ্রিলের ২২ তারিখ পেহেলগামে ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে টানাপড়েন চরমে পৌঁছেছে। দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি নানা শাস্তিমূলক পদক্ষেপও নিচ্ছে।
এনডিটিভির দাবি, ভারত গত ২৪ এপ্রিল রাতে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে বিনা উসকানিতে গুলি চালাচ্ছে। আর গত মঙ্গলবার পাকিস্তান এই গুলি চালানোর ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত করে আন্তর্জাতিক সীমান্তের পারগওয়াল সেক্টর পর্যন্ত নিয়ে যায়, যা জম্মু জেলার অন্তর্ভুক্ত।
ওই দিনই ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) হটলাইন ফোনে কথা বলেন। এই আলোচনায় পাকিস্তানকে বিনা উসকানিতে গুলি চালানো বন্ধ করার জন্য সতর্ক করা হয়, এমন দাবিই করেছে পিটিআই।
পেহেলগাম হামলার পরদিনই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ছিল সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, আতারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনতির ঘোষণা। ভারতের দাবি, হামলার সঙ্গে সীমান্তপারের সন্ত্রাসীদের সংযোগ আছে।
জবাবে পাকিস্তান তার আকাশসীমা ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য বন্ধ করে দেয় এবং ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে। এমনকি তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বাণিজ্যও বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান।
এছাড়া পাকিস্তান ভারতের পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে এবং হুঁশিয়ারি দেয়, পানি বন্ধ করে দেয়া হলে সেটি “যুদ্ধ ঘোষণার” শামিল হবে।
