মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা, ২ মাসের খাবার মজুদের নির্দেশ


কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠছে। দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, হুঁশিয়ারি ও সশস্ত্র উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সীমান্তে প্রতিদিনই গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যেই দেশটির সেনাবাহিনীকে সীমান্তে যেকোনো হুমকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। একই সময়ে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও নিয়ন্ত্রণ রেখার নিকটবর্তী এলাকায় পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালিয়েছে।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, চলমান উত্তেজনা দুই দেশের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নিতে পারে যে কোনো সময়।
যুদ্ধ যে আসন্ন তার আভাস পাওয়া গেছে আগেই। এবার পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হকের এক নির্দেশনায় তা আরও জোরালো হলো। শুক্রবার (২ মে) দেওয়া এক বক্তব্যে আজাদ কাশ্মিরের ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দাদের দুই মাসের খাবার মজুদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
আনোয়ারুল হকে জানান, সীমান্ত রেখার (এলওসি) কাছের ১৩টি নির্বাচনী এলাকার মানুষকে দুই মাসের খাবার মজুদ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকাগুলোর মানুষের খাবার, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যোগান নিশ্চিত রাখতে ১০০ কোটি রুপির ফান্ড গঠন করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, আজাদ কাশ্মিরের রাস্তাঘাটগুলো ঠিক রাখতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি মালিকানাধীন যন্ত্রপাতিও সীমান্ত রেখার কাছে মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সব মাদরাসা ১০ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গরম ও তাপপ্রবাহের জন্য মাদরাসা ছুটির কথা বলা হলেও পাকিস্তান কাশ্মীরের ধর্মবিষয়ক দপ্তরের পরিচালক হাফিজ নাজির আহমেদ রয়টার্সকে জানান, হামলার আশঙ্কা থেকেই মূলত প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে ভারতের সামরিক বাহিনী। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মাদরাসাগুলোকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে ভারত। আমরা শিশুদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে চাই না।
বিশ্লেষক এবং কূটনীতিকরা বলছেন, পাকিস্তান যে কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছে, তার জোরালো প্রমাণ এখনও দেখাতে পারেনি ভারত। এ অবস্থায় দিল্লি কোনো পদক্ষেপ নিলে বিশ্ব মঞ্চে তার ন্যায্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চমলান সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা যদি বাড়তে থাকে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে।
সূত্র: জিও টিভি, রয়টার্স
