বিপজ্জনক গোয়েন্দা তথ্য, যে বার্তা যায় ভারতে


কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর থেকেই ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে স্বচ্ছ ও যৌক্তিক তদন্তে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবুও ভারত একতরফাভাবে বেশ কিছু প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ নেয়, যার পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তান। এতে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
দুই সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা উত্তেজনা ও পারস্পরিক হুমকি-ধমকি শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষে রূপ নেয়, যা চারদিন ধরে কার্যত যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এমন সংকটময় মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে ৪৮ ঘণ্টার টানা আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে, এই যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষাপটে পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের ভূমিকাকে ঘিরে নতুন কিছু তথ্য সামনে এসেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমে সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, মার্কিন প্রশাসনের একটি কেন্দ্রীয় দল- ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন।
পরমাণু অস্ত্রধারী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা যখন চরম পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল সেসময় (৯ মে) বিপজ্জনক গোয়েন্দা তথ্য পায় যুক্তরাষ্ট্র। ওই তথ্যের ভিত্তিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পুরো পরিকল্পনার ব্যাপারে অবহিত করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে জেডি ভ্যান্স সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন।
ফোনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্পষ্ট করে বলেন, হোয়াইট হাউসের মতে, এই সংঘাত আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে এবং সপ্তাহান্তে বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান তিনি।
ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ছিল, দুই দেশের মধ্যে কোনো ধরনের কূটনৈতিক আলোচনা হচ্ছে না। তাই তিনি মোদিকে সংকট সমাধানে সম্ভাব্য একটি রূপরেখা দেন। যুক্তরাষ্ট্র জানতো, পাকিস্তান ওই রূপরেখাটি মেনে নেবে।
সিএনএন আরও জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের বিস্তারিত না জানালেও যুক্তরাষ্ট্রে এই তিন শীর্ষ কর্মকর্তা ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাতভর যোগাযোগ চালিয়ে যান। মোদির সঙ্গে ভ্যান্সের ফোনালাপ ছিল যুদ্ধবিরতির এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এরপর শনিবার (১০ মে) সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির কথা জানান। পরে দুই দেশের পক্ষ থেকেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
