বেলুচিস্তানে স্কুলবাসে আত্মঘাতী হামলা, নিহত ৫, আহত ৩৮


পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে একটি স্কুলবাসকে লক্ষ্য করে চালানো ভয়াবহ আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু রয়েছে। এই ঘটনায় আরও অন্তত ৩৮ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বুধবার (২১ মে) বেলুচিস্তানের খুজদার শহরের কাছে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই হামলার পেছনে ভারতের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।
ঘটনার তদন্ত চলছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে।
স্থানীয় ডেপুটি কমিশনার ইয়াসির ইকবাল জানান, পাকিস্তান সামরিক বাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাচ্ছিল বাসটি। হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে এবং আহতদের কাছাকাছি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, বিস্ফোরণে বাসটি একেবারে পুড়ে গেছে এবং রাস্তায় ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে রয়েছে।
যদিও এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে সন্দেহের তীর বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর দিকে। বিশেষ করে নিষিদ্ধ ঘোষিত বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এ হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে এই গোষ্ঠীটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র।
এই হামলাকে ‘বর্বরোচিত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি। তিনি বলেন, নিরীহ শিশুদের লক্ষ্য করে এই হামলার জন্য দোষীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। প্রথমে বলা হয়েছিল চারজন শিশু মারা গেছে, তবে পরে নিশ্চিত করা হয় যে, নিহতদের মধ্যে দুজন প্রাপ্তবয়স্কও রয়েছেন। আহত কয়েকজন শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে এক বিবৃতিতে হামলাটিকে ‘কাপুরুষোচিত ও নৃশংস’ আখ্যা দিয়ে এর জন্য প্রতিবেশী ভারতকে দায়ী করেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, ভারতের সহায়তায় সক্রিয় গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে বেলুচিস্তানে এই হামলা চালানো হয়েছে।
সেনাবাহিনীর এই অভিযোগের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও। তিনি বলেছেন, এই হামলা প্রমাণ করে যে, ভারত বেলুচিস্তানে শিক্ষার প্রসারের বিরোধী। এ হামলায় জড়িতদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে।
অবশ্য, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও প্রধানমন্ত্রীর এমন বিবৃতির পরও এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায়নি ভারত।
