বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

কোরবানি কাদের ওপর ওয়াজিব?

কোরবানি কাদের ওপর ওয়াজিব?
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

পবিত্র ঈদুল আজহার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো কোরবানি। এটি ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)-এর স্মৃতি বহন করে। তবে প্রশ্ন হলো—সবার ওপর কি কোরবানি ওয়াজিব? না কি কিছু শর্ত রয়েছে?

কোরবানি কার ওপর ওয়াজিব?
ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে, কোরবানি নিম্নলিখিত শর্ত পূরণকারী প্রতিটি মুসলমানের ওপর ওয়াজিব:

মুসলমান হওয়া: অমুসলিমদের ওপর কোরবানি ফরজ বা ওয়াজিব নয়।

বালেগ (সাবালক) হওয়া: অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়।

আক্ল সম্পন্ন (জ্ঞানসম্পন্ন) হওয়া: পাগল বা মানসিকভাবে অক্ষম ব্যক্তির ওপর এ দায়িত্ব বর্তায় না।

মুকিম (নিজ এলাকায় অবস্থানরত) হওয়া: মুসাফির বা ভ্রমণরত ব্যক্তি কোরবানি থেকে মুক্ত, যদিও করতে পারলে এটি নফল হিসেবে গণ্য হবে।

নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া: যার কাছে কোরবানির দিন (১০-১২ জিলহজ) ফজরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সোনা বা রুপা বা তার সমমূল্যের সম্পদ থাকে, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব।

বর্তমানে এর মানদণ্ড হচ্ছে প্রায় ৬১২.৩৬ গ্রাম রুপা বা ৮৭.৪৮ গ্রাম সোনা সমমূল্যের সম্পদ।

কোরবানি কার ওপর ওয়াজিব নয়?
দরিদ্র, দেনাগ্রস্ত, অথবা যাদের কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ নেই

অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অক্ষম ব্যক্তি

যারা ভ্রমণরত অবস্থায় রয়েছে

গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা:
অনেকে ভুলক্রমে মনে করেন, কেবল ফিতরা বা জাকাত গ্রহণযোগ্যতার মানদণ্ড অনুযায়ী বিচার করতে হবে। কিন্তু কোরবানির ক্ষেত্রে এমন সম্পদের ওপর হিসাব করা হয় যা মৌলিক চাহিদা (বাসস্থান, খাদ্য, পোশাক, যানবাহন ইত্যাদি) বাদে অতিরিক্ত।

ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি
হাদিস শরিফে এসেছে,
“যে ব্যক্তি কোরবানি করার সামর্থ্য রাখে, অথচ তা করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।” — (ইবনে মাজাহ)

উপসংহার
কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা শুধু রক্ত ঝরানো নয় বরং আত্মত্যাগ, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সমাজের দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোর একটি মহান উপলক্ষ। তাই সচেতনভাবে জেনে-বুঝে এই দায়িত্ব পালন করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের কর্তব্য।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন