ফ্যাশন নাকি গোনাহ? ট্যাটু নিয়ে ইসলামের অবস্থান


আল্লাহ তায়ালা অভিশম্পাত করেন, যারা নিজেরা পরচুলা ব্যবহার করে এবং যারা অপরকে তা লাগিয়ে দেয়, যারা অঙ্গ–প্রত্যঙ্গে উল্কি বা ট্যাটু আঙ্কন করে, অন্যকে তা করিয়ে দেয়। (বুখারি, হাদিস: ৫৯৩২-৫৯৩৩)
শরীরে উল্কি বা ট্যাটু আঁকা পশ্চিমাদের সাধারণ ফ্যাশন। বর্তমানে আমাদের দেশেও ট্যাটু আঁকতে দেখা যায়। বিভিন্ন চিত্রশিল্পী, গায়ক ও খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে নানা রঙ ও বর্ণের বিভিন্ন ধরনের উল্কি কিংবা ট্যাটু দেখা যায়।
মহান আল্লাহ মানুষকে সবচেয়ে সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন,
নিশ্চয় আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি শ্রেষ্ঠতম-সুন্দর আকৃতিতে। (সুরা: তীন, আয়াত ৪)।
আল্লাহর দেয়া সুন্দর আকৃতিকে বিকৃতি করার অধিকার আমাদের নেই। এজন্য ইসলামে ট্যাটু আর্টকে সম্পূর্ণরুমে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও ট্যাটু মানুষের শরীরে ক্ষতি সাধন করে মারাত্মকভাবে।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এর কাছে এসে এক নারী জিজ্ঞেস করলেন, কোরআনের কোথাও তো উল্কি আঁকার বিষয়ে কথা নাই। আপনি এটা নিষেধ করলেন কেনো? ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, যদি তুমি কোরআন পড়তে অবশ্যই তা পেতে, তুমি কি পড়োনি? রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের যা দেন তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা তোমাদের নিষেধ করেন তা হতে বিরত থাক।
অনেক হাদিসে ট্যাটু আঁকার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যেসব নারী নকল চুল ব্যবহার করে এবং যারা অন্য নারীকে নকল চুল এনে দেয়, যেসব নারী উল্কি অঙ্কন করে এবং যাদের জন্য করে, রসুল (সা.) তাদের অভিশাপ দিয়েছেন। (বুখারি, হাদিস: ৫৫৯৮; মুসলিম, হাদিস: ৫৬৯৩)
হজরত আবদুল্লা ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যেসব নারী সৌন্দর্যের জন্য উল্কি অঙ্কন করে এবং যাদের জন্য করে, যেসব মহিলা ভ্রু উৎপাটন করে এবং দাঁত ফাঁকা করে, আল্লাহ তায়ালা তাদের অভিসম্পাত করেছেন। (বুখারি, হাদিস: ৫৬০৪)
এমন আরও একটি হাদিস মুসলিম শরিফে এসেছে যেটা হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪০৩১)
উল্কি বা ট্যাটু শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নিষিদ্ধ তা নয়; বরং বিভিন্ন ক্ষতিকর দিকের পাশাপাশি বেশ কিছু শারীরিক অসুবিধা ও সমস্যাও এতে তৈরি হয়।
উল্কির কারণে চামড়ায় পানি পৌঁছাতে যদি বাধার সৃষ্টি হয়, তাহলে অজু আদায় হবে না। আবার ফরজ গোসলও সম্পন্ন হবে না। ফলে সব সময় অপবিত্র শরীর থেকে যাবে। এজন্য ইসলাম ট্যাটু বা উল্কির বিষয়ে কঠোরতা দিয়েছে।
দৈএনকে/জে .আ
