শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

কিডনিতে পাথর হলে বুঝবেন যে লক্ষণগুলো দেখলে, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

কিডনিতে পাথর হলে বুঝবেন যে লক্ষণগুলো দেখলে, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

কিডনিতে পাথর হওয়া (কিডনি স্টোন) একটি সাধারণ সমস্যা, যেখানে খনিজ এবং লবণের কঠিন জমাট গঠন হয়। অনেক সময় এই পাথর ছোট হলে স্বাভাবিকভাবে বেরিয়ে যেতে পারে, কিন্তু বড় হলে তা মারাত্মক ব্যথা ও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা না নিলে মূত্রনালির সংক্রমণ ও কিডনি ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। তাই প্রাথমিক লক্ষণগুলো অবহেলা না করে গুরুত্ব সহকারে নেয়া জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনির পাথরের কয়েকটি সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ রয়েছে, যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। নিচে এমনই পাঁচটি উপেক্ষা না করার মতো লক্ষণের কথা বলা হলো।

১. তীব্র বা ধারালো ব্যথা

কিডনি স্টোনের সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রথম লক্ষণ হলো তীব্র ব্যথা। এই ব্যথা সাধারণত পিঠের নিচের দিকে বা শরীরের একপাশে হয় এবং তলপেট বা কুঁচকিতে ছড়িয়ে পড়ে। এই ব্যথা ঢেউয়ের মতো আসা-যাওয়া করে এবং বিশ্রামে কমে না। চিকিৎসক ডা. শ্যাম বর্মার মতে, এই ব্যথা সাধারণ পেশির ব্যথা নয় বরং ইউরেটারে পাথর চলাফেরার ফলে সৃষ্টি হওয়া একধরনের খিঁচুনি।

২. প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা রক্ত

পাথর মূত্রনালিতে নামতে শুরু করলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হতে পারে। পাশাপাশি প্রস্রাবে রক্ত দেখা যেতে পারে লাল, গোলাপি বা বাদামি রঙের। এমনকি খালি চোখে না দেখলেও পরীক্ষায় রক্তের উপস্থিতি ধরা পড়তে পারে। এটি পাথরের ঘর্ষণের ফলে মূত্রনালির ক্ষত থেকে হতে পারে।

৩. প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন

কিডনি স্টোনের কারণে প্রস্রাব ঘোলা বা দুর্গন্ধযুক্ত হতে পারে। পাথর মূত্রপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে, যার ফলে সংক্রমণ হয় এবং প্রস্রাব ঘোলা বা বাজে গন্ধযুক্ত হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষণ এবং অবহেলা করা উচিত নয়।

৪. ঘন ঘন প্রস্রাবের অনুভূতি

প্রস্রাবের বেগ বারবার আসা, অথবা বারবার টয়লেটে গিয়ে খুব সামান্য প্রস্রাব হওয়াও একটি লক্ষণ। এটি অনেক সময় ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশনের মতো মনে হতে পারে, কিন্তু সংক্রমণ না থাকলে কিডনি স্টোনই এর কারণ হতে পারে।

৫. বমি বমি ভাব বা বমি

ডা. আশ্বথী হরিদাস জানান, কিডনি স্টোনের কারণে তীব্র ব্যথার ফলে শরীর একটি স্ট্রেস রেসপন্স দেখায়, যার ফলে বমি বা বমি বমি ভাব দেখা দেয়। কিডনির সঙ্গে পাচনতন্ত্রের স্নায়ু সংযোগ থাকায় পাথরের চাপ বা অবরোধ হজমে প্রভাব ফেলে।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

কিডনির পাথরের লক্ষণগুলো পাথরের অবস্থান ও আকার অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। ছোট পাথর অনেক সময় কোনো লক্ষণ না দিয়েও বের হয়ে যেতে পারে। তবে নতুন করে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, প্রস্রাবের ধরণে পরিবর্তন বা রক্ত দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

প্রাথমিক অবস্থাতেই যদি রোগ নির্ণয় করা যায় (প্রস্রাব পরীক্ষা বা সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে), তাহলে তুলনামূলকভাবে সহজ চিকিৎসায় যেমন পর্যাপ্ত পানি পান, ব্যথানাশক ও ওষুধ, বা প্রয়োজনে লিথোট্রিপসি ও সার্জারির মাধ্যমে পাথর দূর করা সম্ভব। প্রাথমিক লক্ষণ অবহেলা করলে পরবর্তীতে তা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।


দৈএনকে/জে,আ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন