ডাক্তারের চোখ নয়, এবার এআই-এর চোখ—সেলফিতেই ধরা পড়বে রোগ


চ্যাটবটের মাধ্যমে রেসিপি থেকে শুরু করে জটিল গণিত সমাধান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট কিংবা প্রেজেন্টেশন তৈরির মতো কাজ এখন খুব সহজেই করে দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)। এক কথায়, এআই হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তবে এখানেই শেষ নয়। এআই এখন আরও এক ধাপ এগিয়েছে—শুধু একটি সেলফি দেখেই বলে দিতে পারবে আপনার বয়স ও সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি।
এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়েছে FaceAge নামের একটি এআই টুলের মাধ্যমে। গবেষকদের দাবি, এটি শুধু বয়স আন্দাজ করেই থেমে থাকে না, বরং মুখের ভাঁজ, ত্বকের ধরন এবং অন্যান্য সূক্ষ্ম উপাদানের ভিত্তিতে ব্যক্তির স্বাস্থ্যগত অবস্থা, এমনকি ভবিষ্যতে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কাও বিশ্লেষণ করতে পারে।
গবেষণার পেছনের বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে ডিজিটাল হেলথ স্ক্রিনিং বা রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজ, সাশ্রয়ী এবং দ্রুত করার জন্য এটি হতে পারে একটি বড় পদক্ষেপ।
এআই-এর এই সক্ষমতা শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, বাস্তবে এর প্রয়োগ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে কিছু চিকিৎসা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে।
শুধু কাজের নয়, এখন স্বাস্থ্য সচেতনতায়ও এআই আপনার পাশে।
চিকিৎসা জগতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ব্যবহার দিন দিন নতুন মাত্রা পাচ্ছে। এবার সেই ব্যবস্থায় যোগ হয়েছে আরও একটি যুগান্তকারী প্রযুক্তি—সেলফি দেখেই বলে দেবে আপনার বায়োলজিক্যাল এজ এবং সম্ভাব্য স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি।
এই অভিনব প্রযুক্তির নাম FaceAge। এটি একটি শক্তিশালী ডিপ লার্নিং-ভিত্তিক এআই মডেল, যা হাজার হাজার মানুষের মুখের ছবি বিশ্লেষণ করে শেখে এবং বোঝে, কোনো ব্যক্তির মুখে কী ধরনের শারীরিক লক্ষণ বা পরিবর্তন রয়েছে।
এই মডেলের মূল ভিত্তি একটি পরিচিত চিকিৎসা পদ্ধতি—‘আইবল টেস্ট’। অর্থাৎ, একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক যখন রোগীকে চেম্বারে সামনে পান, তখন শুধুমাত্র তাকিয়েই প্রাথমিকভাবে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি করেন। এটিই পরিচিত ‘ক্লিনিক্যাল আই’ নামে।
FaceAge ঠিক সেই কাজটিই করছে—তবে মানুষের চোখের বদলে কাজ করছে ডেটা ও এলগরিদমের চোখে। এটি মুখের ভাঁজ, চোখের নিচের অংশ, ত্বকের টোনসহ আরও নানা সূক্ষ্ম উপাদান বিশ্লেষণ করে বলে দিতে পারে, একজন ব্যক্তি তার বয়স অনুযায়ী কতটা সুস্থ বা বিপদে রয়েছেন।
এই উদ্ভাবনী এআই মডেলটি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনভিত্তিক একটি স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের স্পষ্ট বার্তা—এই প্রযুক্তি কোনোভাবেই ডাক্তারদের ক্লিনিক্যাল দক্ষতাকে প্রতিস্থাপন করবে না। বরং চিকিৎসকের সিদ্ধান্তকে আরও তথ্যসমৃদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য করে তুলবে।
FaceAge-সংক্রান্ত গবেষণা ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে প্রখ্যাত জার্নাল Lancet Digital Health-এ। চলছে পাইলট স্টাডি, যেখানে এই প্রযুক্তিকে সীমিত পরিসরে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
গবেষকরা আশাবাদী, খুব শিগগিরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যসেবায় এই এআই মডেল সহযোগী টুল হিসেবে ব্যবহৃত হবে। রোগ নির্ণয়ের প্রাথমিক ধাপে এটি হয়ে উঠতে পারে এক নির্ভরযোগ্য সহায়ক প্রযুক্তি।
