শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

সকলের সমন্বিত উদ্যোগে তামাক মুক্ত দেশ গড়া সম্ভব

 সকলের সমন্বিত উদ্যোগে তামাক মুক্ত দেশ গড়া সম্ভব
সিগারের মাধ্যমে ধুমপান করে ৪৫ শতাংশ পুরুষ এবং ১.৫ শতাংশ মহিলা। ছবি: সংগৃহীত।
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পৃথিবীর সকল দেশে এটি সর্বজন স্বীকৃত। ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ দিবসটি পালিত হয়। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে ওই দিন থেকে তামাক বা ধুমপান ছেড়ে দিয়ে তামাকমুক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া। 

বাংলাদেশে তামাক বর্জনে সচেতনার লক্ষে সরকার, গণমাধ্যম, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো নানা ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে সাথে বিভিন্ন সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগের প্রেক্ষিতে তামাক বর্জনে সচেতনতা এবং আন্দোলন অনেকাংশে গতিশীল হয়েছে। তবে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও তামাক কোম্পানি গুলোর আগ্রসী প্রচারণা এবং উদ্ধুদ্ধকরণ কার্যক্রমে তামাক বিরোধী প্রচারণা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। তামাকের বিজ্ঞাপন প্রচারণা দ-নীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও বিভিন্ন সিগারেট, বিড়ি, জর্দা,গুল কোম্পানি তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে নানা কৌশলে।  

ধুমপান মৃত্যুর জন্য দায়ী, তবে কেন ধুমপান রোধে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আইন রয়েছে? তামাক ব্যবহার কমাতে বিশ্বের ৭৭টি দেশে এরই মধ্যে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্ক বার্তা দেয়া শুরু করেছে। বাংলাদেশে ২০০৫ সালে নীতিমালা করা হলেও এখনো তা শতভাগ মানা হচ্ছে না। আমাদের দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী পাবলিক প্রেস ও গণ পরিবহনে ধুমপান দ-নীয় অপরাধ। এ আইন অমান্য করলে জরিমানার বিধান রয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের (নারী-পুরুষ) কাছে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রির উপর নিষেধাক্ষা থাকলেও আইন মানছে না। প্রকাশ্যে শিশু-কিশোরদের ধুমপান করতে দেখা যাচ্ছে। মহিলারাও তামাকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। সিগারেট, গুল, জর্দা ও তামাকপাতা সেবনকারী মহিলার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আইন, কঠোর, বিধান, জরিমানা বা প্যাকেটে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ছবি ছাপানোর পরও ধুমপায়ীদের দমানো যাচ্ছে না। ধুমপানসহ তামাক ব্যবহারের হার বেড়ে চলেছে। 

এদিকে, ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ধুমপান, তামাকজাত দ্রব্যর ব্যবহারের হার ছিল ৪৩.২ শতাংশ। বর্তমানে, তা বেড়ে দাড়িয়েছে পুরুষ ৫৮ শতাংশ ও মহিলা ২৯ শতাংশ। বিড়ি বা সিগারের মাধ্যমে ধুমপান করে ৪৫ শতাংশ পুরুষ এবং ১.৫ শতাংশ মহিলা। চর্বনযোগ্য তামাক ব্যবহারে পুরুষের চেয়ে নারীরা এগিয়ে। এ ক্ষেত্রে নারী ২৭.৯ শতাংশ এবং ২৬.৪ শতাংশ পুরুষ। দেশে ৪ কোটি ৮০ লাখ মানুষ নানা ভাবে তামাক সেবন করছেন। ২ কোটি ১৪ লাখ পুরুষ ও ৭ লাখ মহিলা ধুমপান করে থাকেন। এ ছাড়া ১ কোটি ২৫ লাখ পুরুষ ও ১ কোটি ৩৪ লাখ মহিলা চর্বনযোগ্য তামাক ব্যবহার করেন। তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ফলে বাংলাদেশে প্রতিদিন তামাক জনিত রোগে ১৫৬ জন মৃত্যুবরণ করছে। 

বছরে ৫৭ হাজার ব্যক্তি মৃত্যু বরণ করছে এবং ৩ লাখ ৮২ হাজার পঙ্গুত্ব বরণ করছে। এছাড়া ধুমপানের কারণে কমক্ষেত্রে ১ কোটি ১৫ লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোলের (সিডিসি) গবেষণায় দেখা গেছে,২১ বছর বয়সের আগে যারা তামাকে আসক্ত হয়ে পড়ে, তাদের মধ্যে নিকোটিন নির্ভরতা এবং আমৃত্যু তামাক ব্যবহারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। গ্লোবাল স্কুল-বেজড হেলথ সার্ভে, ২০১৪ (জিএসএইচএস) অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৯ দশমিক ২ শতাংশ।


প্রকাশ ঘোষ বিধান,পাইকগাছা,খুলনা
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন