যে ৬ ফল নিয়মিত খাওয়াতে লিভার ও কিডনি সুরক্ষা


শরীর নিজেই জানে কীভাবে নিজেকে পরিষ্কার রাখতে হয়, সুস্থ রাখতে হয় ও ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়। তবে দূষণ, মানসিক চাপ, প্রক্রিয়াজাত খাবার ইত্যাদি কারণে শরীরের এই স্বাভাবিক সিস্টেম চাপের মুখে পড়ে যায়। বিশেষ করে লিভার ও কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো।
এই তথ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানানো হয়।
এই অঙ্গগুলো নিঃশব্দে কাজ করে চলে ফিল্টার করে, পরিশোধন করে এবং আমাদের শরীরকে প্রতিনিয়ত পরিষ্কার রাখে। আর তাদের পাশে দাঁড়াতে পারে প্রকৃতির নিজস্ব উপহার ফলমূল। প্রতিদিনের ডায়েটে কিছু নির্দিষ্ট ফল রাখলে লিভার ও কিডনির যত্ন নেয়া সহজ হয়।
চলুন জেনে নেই এমন ৬টি ফল, যা শুধুমাত্র “স্বাস্থ্যকর” নয় বরং সরাসরি লিভার ও কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
১. জাম
জামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ গুদা ও বীজ কিডনির উপর অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে, জাম এক্সট্রাক্ট উচ্চ রক্তচাপ এবং প্রদাহজনিত কারণে কিডনির ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়ক। এছাড়াও এটি বিপাকের ভারসাম্য রক্ষা করে, ফলে লিভারের ওপর চাপ কমে। মৌসুমে প্রতিদিন এক মুঠো জাম খেলে শুধু স্বাদই নয়, সুস্থতাও পাওয়া যায়।
২. ডালিম
ডালিম নীরবে কিডনি ডিটক্সের কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়ালাইসিস রোগীদের টক্সিন লেভেল কমাতে ডালিমের ভূমিকা রয়েছে। এতে থাকা ‘পুনিক্যালাজিন’ নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমায় এবং কিডনিতে পাথর গঠনের ঝুঁকি কমায়। প্রতিদিন ছোট একটি বাটিতে ডালিম খাওয়ার অভ্যাস কিডনি রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
৩. পেঁপে
পেঁপেতে থাকা ‘পাপাইন’ এনজাইম প্রোটিন ভাঙতে সাহায্য করে, ফলে লিভারের উপর চাপ কমে। এছাড়া এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ও ভিটামিন সি ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে কার্যকর। আয়ুর্বেদসহ অনেক প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রে কাঁচা পেঁপে বা পেঁপে রস হালকা লিভার ডিটক্সে ব্যবহৃত হয়।
৪. ক্র্যানবেরি
ইউরিনারি ইনফেকশন প্রতিরোধ ছাড়াও, ক্র্যানবেরিতে থাকা ‘প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিন’ কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি কিডনি রোগের অগ্রগতি কমাতে পারে। শুকনো ক্র্যানবেরি সকালে খাবারের সঙ্গে খেলে দৈনিক সুরক্ষা পাওয়া সম্ভব।
৫. সবুজ মাল্টা
শুধু ঠাণ্ডার প্রতিকার নয়, সবুজ মাল্টা হজমে সহায়ক এবং এতে থাকা লিমোনয়েড লিভার এনজাইম সক্রিয় করে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। এটি হালকা ও নিয়মিত লিভার পরিষ্কারের কাজ করে, বিশেষ করে যাদের হজমে সমস্যা বা পেট ফুলে থাকে তাদের জন্য উপকারী। চিনি ও লবণ ছাড়া সবুজ মাল্টার রস লিভারকে সতেজ রাখে।
৬. তরমুজ
তরমুজ প্রাকৃতিক ডাইউরেটিক, অর্থাৎ প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করতে সাহায্য করে, কিডনির উপর চাপ না দিয়েই। এতে থাকা ‘সিট্রুলাইন’ রক্তপ্রবাহ ভালো রাখে ও শরীর থেকে অ্যামোনিয়া অপসারণে সাহায্য করে। গরমকালে তরমুজ খাওয়া বা রস পান করা কিডনিকে ঠাণ্ডা ও সক্রিয় রাখতে সহায়ক।
খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা
এই ফলগুলো খাওয়ার পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত খাবার ও অতিরিক্ত মাংস খাওয়া কমিয়ে, পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চা করলে লিভার ও কিডনি থাকবে সুস্থ ও কর্মক্ষম।
‘সুস্থ লিভার, হাসিখুশি কিডনি’ এটাই হোক প্রতিদিনের অঙ্গীকার।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
দৈএনকে/জে,আ
