ভারতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত জনজীবন, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা


উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে টানা ভারি বর্ষণের ফলে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে। গত দুদিনে এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০ জন। পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কায় রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো।
রোববার, ১ জুন, ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ এবং মিজোরামের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে লাগাতার বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে, তবে টানা বৃষ্টিপাতে তা ব্যাহত হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর ও মিজোরাম। আসামে ১২টি জেলায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন রাজ্য থেকে নতুন নতুন দুর্ঘটনার খবর আসছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
আসামের কামরূপ মেট্রোপলিটন জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ভূমিধসে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গোয়াহাটির উপকণ্ঠে বন্ডা এলাকায় ভূমিধসে ৩ নারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন রাজ্যের নগর উন্নয়নমন্ত্রী জয়ন্ত মল্ল বড়ুয়া।
অন্যদিকে, অরুণাচল প্রদেশে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় মারা গেছেন ৯ জন। ইস্ট কামেং জেলায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় দুটি পরিবারের ৭ জন সদস্য একসঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন। ভূমিধসের সময় তাদের গাড়িটি রাস্তা থেকে পড়ে গিয়ে পানির তোড়ে ভেসে যায়।
আবহাওয়া বিভাগ আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে রেড, অরেঞ্জ ও ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করেছে। এতে নতুন করে ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গৌহাটিতে শুক্রবার রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে— ৬৭ বছরে যা সর্বোচ্চ। ওইদিন শহরে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। ফলে শহরের বহু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে এবং ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যায়।
এদিকে সিকিমেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। শনিবার রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমে তিস্তার পানি বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যায়। লাচুং ও লাচেন এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রায় দেড় হাজার পর্যটক সেখানে আটকে পড়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও অব্যাহত বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
