বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

মেটা এআই ব্যবহারকারী ১০০ কোটির বেশি, ভারতে বিপুল সাড়া

মেটা এআই ব্যবহারকারী ১০০ কোটির বেশি, ভারতে বিপুল সাড়া
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার মধ্যে নতুন এক মাইলফলকে পৌঁছেছে মার্ক জুকারবার্গের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেটার তৈরি এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট ‘মেটা এআই’। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক শেয়ারহোল্ডার সভায় মেটার সিইও মার্ক জুকারবার্গ জানান, বর্তমানে মেটা এআই-এর মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত মেটা এআই-এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ কোটি। মাত্র কয়েক মাসেই সেটি দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রথমে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয় মেটা এআই। এরপর এটি ধাপে ধাপে যুক্ত করা হয় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার এবং ওয়েবভিত্তিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে। ব্যবহারকারীরা তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজে এটি ব্যবহার করতে শুরু করেন—যেমন, প্রশ্নোত্তর, তথ্য অনুসন্ধান, রেস্তোরাঁ খোঁজা, পড়াশোনা, ভ্রমণ পরিকল্পনা, এমনকি কনটেন্ট সাজেশন ইত্যাদি।

মেটা এআই-এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায় ২০২৪ সালের জুনে, যখন এটি ভারতের বাজারে উন্মুক্ত করা হয়। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্মার্টফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে ভারতের বাজারে প্রবেশের পরপরই অ্যাপটির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, স্থানীয় ভাষা বুঝতে ও ব্যবহারকারীর প্রাসঙ্গিক প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হওয়ায় খুব কম সময়েই মেটা এআই সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের অংশ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে হোয়াটসঅ্যাপ-নির্ভর যোগাযোগব্যবস্থায় এটি সহজেই জায়গা করে নেয়।

একাধিক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, মেটা এআই-এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি সরাসরি মেসেজিং অ্যাপের মধ্যেই ব্যবহার করা যায়। আলাদা কোনো অ্যাপ ডাউনলোড বা লগইনের প্রয়োজন পড়ে না। ফলে, প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহী নানা শ্রেণির মানুষ খুব সহজেই এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারছেন।

বিশেষ করে শিক্ষার্থী, কনটেন্ট নির্মাতা এবং পর্যটকদের জন্য এই এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট কার্যকর সহায়ক হয়ে উঠছে।

মেটা সম্প্রতি ‘মেটা এআই’ নামে একটি স্বতন্ত্র অ্যাপও উন্মুক্ত করেছে, যেখানে ব্যবহারকারীরা আলাদা করে এআই চ্যাট বা টুলস ব্যবহার করতে পারবেন। যদিও মেটা এখনই এই প্ল্যাটফর্ম থেকে সরাসরি আয় করতে আগ্রহী নয় বলে জানিয়েছেন জুকারবার্গ, তবে ভবিষ্যতে সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক ফিচার বা পেইড পরিষেবা চালুর পরিকল্পনার কথাও ইঙ্গিত করেছেন তিনি।

বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের দৌড়ে মেটা এআই-এর এই সাফল্য শুধু মেটার জন্য নয়, বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তির জনপ্রিয়তার একটি স্পষ্ট নির্দেশনা। সহজলভ্যতা, বহু ভাষায় সাড়া দেওয়ার সক্ষমতা এবং দৈনন্দিন জীবনে বাস্তব প্রয়োগযোগ্যতার কারণে এটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে এমন প্রযুক্তি শুধু প্রশ্নোত্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং মানুষের ডিজিটাল সহকারী হিসেবে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন