করোনা সংক্রমণ বাড়ছে: সীমিত পরিসরে আবারও চালু হচ্ছে পরীক্ষা


দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সীমিত পরিসরে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে আরটি–পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেসব স্থানে পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হবে।
বুধবার (১১ জুন) গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক হালিমুর রশীদ জানান, যেসব হাসপাতালে আরটি–পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেখানে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়ভাবে পরীক্ষার কিট সংগ্রহের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও কিট আমদানির প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি আগামী ১০ দিনের মধ্যে সীমিত আকারে করোনা পরীক্ষা চালু করতে পারব।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র করোনা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদেরই এই পরীক্ষার আওতায় আনা হবে। পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত হবেন তারা—
-
যাদের শরীরে কোভিড–১৯–এর উপসর্গ রয়েছে (যেমন জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট)
-
অথবা যাদের চিকিৎসক করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দেবেন
অধ্যাপক হালিমুর রশীদ আরও বলেন, “যদি সংক্রমণের হার বাড়তে থাকে, তবে পরীক্ষার আওতা আরও বাড়ানো হবে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা একটি উচ্চ শনাক্ত হার নির্দেশ করে।
এর আগে ৯ জুন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে এবং বিমানবন্দরসহ দেশের সব প্রবেশপথে হেলথ স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালু রাখার নির্দেশ দেয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই সংক্রমণ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে দেশে আবারও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্যই আগাম সতর্কতা হিসেবে আবার পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে যে হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা চালু হবে সেগুলো হলো—ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরের হাসপাতালসমূহ। যেসব হাসপাতালে আরটি–পিসিআর ল্যাব রয়েছে, কেবল সেখানেই প্রাথমিকভাবে এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সবাইকে মাস্ক পরার, নিয়মিত হাত ধোয়ার এবং উপসর্গ দেখা দিলে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। অধ্যাপক হালিমুর রশীদ বলেন, “আমরা চাই না পরিস্থিতি আবার হাতের বাইরে চলে যাক। তাই সবাইকে এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে।”
প্রসঙ্গত, ১০ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত করোনা বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত সবাই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা। তবে এ সময়ে কোনো মৃত্যু হয়নি। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ২ জন। দেশে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৮ জনে।
এন কে/বিএইচ
