ফাইবার অপটিক ড্রোন: অদৃশ্য আতঙ্ক নাকি যুদ্ধের ভবিষ্যৎ?


দীর্ঘমেয়াদি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ক্রমেই নতুন প্রযুক্তির পরীক্ষামঞ্চে পরিণত হচ্ছে। প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে আরও ভয়ংকর, আরও উন্নত সামরিক অস্ত্রের ব্যবহার। এ যুদ্ধের সাম্প্রতিকতম ও আলোচিত অস্ত্র ‘ফাইবার অপটিক ড্রোন’—যাকে বলা হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রের ‘নীরব ঘাতক’।
প্রথমে একমাত্র রাশিয়াই এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছিল। এখন ইউক্রেনও পাল্টা আক্রমণে এই ড্রোন মোতায়েন করছে।
কীভাবে কাজ করে এই ড্রোন?
এই ড্রোনগুলোকে ফাইবার অপটিক কেবলের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। এতে কোনো ধরনের রেডিও সিগন্যাল ব্যবহৃত হয় না, ফলে সাধারণ ড্রোন শনাক্তকারী রাডার কিংবা মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম এগুলোকে ধরতে পারে না।
ড্রোনটি মাটিতে বসে থাকা অপারেটর অপটিক কেবলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করেন। একে বলে ‘রেডিও সাইলেন্ট ড্রোন’। ফলে শত্রুর পক্ষে ড্রোনের উপস্থিতি টের পাওয়া অত্যন্ত কঠিন।
একবার কেউ কেবল কাটতে গেলেই, সেটি ক্যামেরায় ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই ড্রোনে থাকা বিস্ফোরক দিয়ে হামলা চালানো হয়।
মারাত্মক দিকগুলো কী?
ড্রোনের টাইটেনিয়াম ব্লেড অতিশয় ধারালো, যা কাছে গেলে মারাত্মক শারীরিক ক্ষতি করতে পারে।
ড্রোনে থাকে বিস্ফোরক, যা লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম।
সেনাঘাঁটি, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, এমনকি যানবাহনেও এ ড্রোন সহজেই পাঠানো যায়।
সীমাবদ্ধতাও রয়েছে:
যেহেতু এটি কেবলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, তাই এর গতি ও পরিসীমা সীমিত (সাধারণত ১০–৪০ কিলোমিটার)। কেবল যদি কোনো গাছে বা অবকাঠামোয় আটকে যায়, ড্রোন অকেজো হয়ে পড়তে পারে। তাছাড়া এই ড্রোন উচ্চমাত্রায় উড়তে পারে না, এবং তুলনামূলকভাবে ধীরে এগোয়।
ইউক্রেনের জবাব:
রাশিয়ার এই কৌশলের জবাবে ইউক্রেনও ফাইবার অপটিক ড্রোন ব্যবহার শুরু করেছে। ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ডের টুয়েলভথ স্পেশ্যাল ফোর্স ব্রিগেড এ ধরনের ড্রোন হামলায় সক্রিয়।
এই ‘নীরব ঘাতক’ ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্রে প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে—যেখানে শব্দহীন, রাডারে অদৃশ্য অস্ত্রই হয়ে উঠছে সবচেয়ে মারাত্মক।
