গাজায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, সংকটে মানবিক সহায়তা


গাজার শেষ অপটিক্যাল ফাইবার লাইনটিও ধ্বংস করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এর ফলে পুরো উপত্যকা এখন ইন্টারনেট এবং ল্যান্ডলাইন যোগাযোগ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ একে একটি পরিকল্পিত ‘ডিজিটাল ব্ল্যাকআউট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে, যার উদ্দেশ্য গাজাবাসীকে বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করা।
ফিলিস্তিনি টেলিকম নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (PTRC) বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গাজার প্রধান ফাইবার নেটওয়ার্কের শেষ রুট ধ্বংস হওয়ার ফলে সমগ্র গাজা এখন কার্যত নীরব ও অন্ধ। এতে ইন্টারনেট ও টেলিফোন যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।’
তারা আরও জানায়, এটি টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক হামলার সর্বশেষ পর্ব, যা ফিলিস্তিনিদের কণ্ঠরোধ এবং তথ্য প্রবাহ বন্ধ করার একটি সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ।
এই সংযোগ বিচ্ছিন্নতা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন গাজার মানবিক পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইসরাইলি হামলায় ইতোমধ্যে টেলিকম সেবাসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বেসামরিক জনগণের জরুরি সেবার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন। এতে:
> আহতদের জন্য জরুরি চিকিৎসা সহায়তা পাওয়া অসম্ভব হয়ে উঠছে
> উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে
> গাজায় চলমান যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ নথিভুক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ছে
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন আরও ১০৩ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৪২৭ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৫,২০৭ জন এবং আহত হয়েছেন ১,২৭,৩৯৪ জনেরও বেশি মানুষ।
তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও হাজারো নিখোঁজ মানুষকে মৃত ধরে নেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা একে আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
সূত্র: আল-মায়াদিন
