শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

বিশ্বের ভয়াবহ ১০ বিমান দুর্ঘটনা ও সাম্প্রতিক কিছু বিমান বিপর্যয়

বিশ্বের ভয়াবহ ১০ বিমান দুর্ঘটনা ও সাম্প্রতিক কিছু বিমান বিপর্যয়
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

বিশ্বায়নের এ যুগে দ্রুতগামী জীবনধারার কারণে বিমানভ্রমণ এখন নিত্য প্রয়োজনীয়। আধুনিক প্রযুক্তি এবং কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে আজকাল বিমানযাত্রা অধিকাংশ সময়েই নিরাপদ। তবে, মাঝে মাঝে ঘটে যাওয়া কিছু ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা আমাদের বিমূঢ় করে তোলে এবং মনে করিয়ে দেয় — প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা ও মানবিক ভুল কতটা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। নিচে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ১০টি বিমান দুর্ঘটনা ও সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা তুলে ধরা হলো:

ইতিহাসের ভয়াবহ ১০ বিমান দুর্ঘটনা
জাপান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ১২৩ (১৯৮৫) – ৫২০ জন নিহত

টোকিও থেকে ওসাকা যাওয়ার পথে বোয়িং ৭৪৭ বিমানের প্রেসার সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ইতিহাসে এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাণঘাতী একক বিমান দুর্ঘটনা।

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৮২ (১৯৮৫) – ৩২৯ জন নিহত
কানাডা থেকে লন্ডনগামী বিমানে বোমা বিস্ফোরণে সবাই নিহত হন। এটি ভারতীয়দের বিরুদ্ধে সংগঠিত একটি সন্ত্রাসী হামলার অংশ ছিল।

ছারখি দাদরি বিমান সংঘর্ষ, ভারত (১৯৯৬) – ৩৪৯ জন নিহত
দিল্লির আকাশে সৌদি ও কাজাখস্তানের দুটি বিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

তুর্কিশ এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৯৮১ (১৯৭৪) – ৩৪৬ জন নিহত
ফ্রান্সে কার্গো দরজার নকশাগত ত্রুটির কারণে ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হয়।

মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ১৭ (২০১৪) – ২৯৮ জন নিহত
ইউক্রেনের আকাশে গুলির আঘাতে ভূপাতিত হয় এই ফ্লাইটটি।

এয়ার ফ্রান্স ফ্লাইট ৪৪৭ (২০০৯) – ২২৮ জন নিহত
রিও ডি জেনিরো থেকে প্যারিসগামী ফ্লাইটটি আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ হয়ে যায়।

আমেরিকান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ১৯১ (১৯৭৯) – ২৭২ জন নিহত
উড্ডয়নের সময় ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৩৭০ (২০১৪) – ২৩৯ জন নিখোঁজ
কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংগামী এই ফ্লাইটটি রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। ব্যাপক অনুসন্ধান সত্ত্বেও আজও এর খোঁজ মেলেনি।

নেপালের ইয়েতি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট (২০২৩) – ৭২ জন নিহত
পোখারায় অবতরণের আগ মুহূর্তে পাইলটের ভুলে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

সাউথ কোরিয়ার বিমান বিধ্বস্ত (২০২৪) – ১৭৯ জন নিহত
জেজু এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ল্যান্ডিং গিয়ার সমস্যা থাকায় অবতরণকালে দুর্ঘটনা ঘটে।

চলতি বছরের উল্লেখযোগ্য বিমান দুর্ঘটনা
আলাস্কা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৭৩৭ ম্যাক্স ৯ (২০২৫)

মাঝ আকাশে বিমানের একটি জানালা ও বাইরের অংশ খসে পড়ে। জরুরি অবতরণে কেউ হতাহত না হলেও বোয়িংয়ের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট (২০২৪)
কাজাখস্তানে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। তদন্ত চলছে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত (২০২৫)
বরিশালের কাছে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে দুই পাইলট নিহত হন। বিমানটি ছিল রুটিন প্রশিক্ষণ মিশনে।


এইসব দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত স্মরণ করিয়ে দেয় যে, যাত্রা যত আধুনিকই হোক না কেন, নিরাপত্তা এবং মানবিক দায়িত্বশীলতার কোনো বিকল্প নেই। এভিয়েশন সেক্টরে প্রযুক্তির উন্নতির পাশাপাশি দক্ষ প্রশিক্ষণ, কঠোর তদারকি এবং স্বচ্ছ তদন্তপ্রক্রিয়াই কেবল ভবিষ্যতের দুর্ঘটনাগুলো রোধ করতে পারে।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন