শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

মধ্যরাতে আকাশপথে সংঘর্ষ, ইরানের হাতে বন্দি নারী পাইলট?

মধ্যরাতে আকাশপথে সংঘর্ষ, ইরানের হাতে বন্দি নারী পাইলট?
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢেলে এবার ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা ভেদ করে দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইরান। এর মধ্যে একটি বিমানের নারী পাইলট জীবিত অবস্থায় আটক হয়েছে বলেও বিস্ফোরক দাবি করেছে তেহরান।

শনিবার ভোরে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) দাবি করে, ইসরায়েলের F-15 ও F-16 মডেলের দুটি যুদ্ধবিমান ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে, সেগুলো টার্গেট করে সতর্কবার্তা ছাড়াই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়।

প্রচণ্ড বিস্ফোরণে একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয় তেহরানের উত্তরে, অন্যটি বিধ্বস্ত হয় কাশান প্রদেশের সীমান্ত এলাকায়। ঘটনার পরপরই দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে এক নারী পাইলটকে জীবিত অবস্থায় আটক করে ইরানি বাহিনী—এমনটাই জানিয়েছে স্থানীয় রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।

ইরানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, “এই পদক্ষেপ আমাদের নিরাপত্তার সীমানা রক্ষার অংশ। কেউ ইরানের আকাশে অনুপ্রবেশ করলে, তার জবাব শুধু কাগজে-কলমে হবে না।”

তবে ইসরায়েল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিমান হারানোর বিষয়টি স্বীকার করেনি। তারা বলছে, “ভুয়া প্রচারণা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য ইরান সবসময়ই নাটক সাজায়।” তবুও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ইরানের দাবি সত্যি হয়, তবে এটি যুদ্ধের গতিপথে বড় ধরনের মোড় আনতে পারে।

বিশ্বজুড়ে এখন চলছে উৎকণ্ঠা—আটক নারী পাইলট ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কোন স্তরের সদস্য? তার ভাগ্যে কী ঘটবে? এবং সবচেয়ে বড় প্রশ্ন: এই ঘটনার পর কী সরাসরি যুদ্ধেই জড়িয়ে পড়ছে ইরান ও ইসরায়েল?
মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনার মধ্যে এবার ইসরায়েলের দুটি F-35 যুদ্ধবিমান এবং অসংখ্য ক্ষুদ্র ড্রোন (মাইক্রো এয়ার ভেহিকল) গুলি করে নামানোর দাবি করেছে ইরান।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (IRGC) ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ এজেন্সি এবং সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা—দুই মাধ্যমেই এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী রাজধানী তেহরান ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রযুক্তিনির্ভর পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে এফ-৩৫ বিমান ও ড্রোন ধ্বংস করে। তারা দাবি করেছে, ইসরায়েলের এয়ার স্ট্রাইক ব্যর্থ করতে এই প্রতিরক্ষা ছিল "সম্পূর্ণ প্রস্তুত ও পূর্বনির্ধারিত"।

ইসরায়েলের অস্বীকৃতি ও পাল্টা দাবি
তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এই প্রতিবেদনকে “ভিত্তিহীন গুজব” হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন,

“ইরান নিজেদের জনগণের মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করতে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। আমাদের কোনো বিমান ভূপাতিত হয়নি।”

‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’: যুদ্ধের সূচনা?
উল্লেখ্য, ১২ জুন দিবাগত রাতে ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের একটি সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইরানে বড় পরিসরে হামলা চালায়।

হামলায় লক্ষ্য করা হয়:

পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র

সামরিক ঘাঁটি

বিভিন্ন আবাসিক এলাকা

এই হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কমান্ডার হোসেইন সালামি, এবং ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ কমপক্ষে ৭৮ জন নিহত হয়েছেন বলে ইরান দাবি করেছে।

ইরানের পাল্টাঘাত: 'অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩'
হামলার জবাবে ১৪ জুন শুক্রবার রাত থেকে ইরান শুরু করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’। এই অভিযানে শত শত মিসাইল ছোড়া হয়েছে ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনা ও সীমান্তবর্তী শহরগুলোর দিকে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪ জন নিহত এবং বহু ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

ইরানি মিসাইল হামলার পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার নিরাপত্তা প্রধান ও মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আশ্রয় নেন ভূগর্ভস্থ বাংকারে।

উত্তেজনার চূড়ায় দুই পরাশক্তি
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘাত দুই দেশের মধ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানানো হচ্ছে, কিন্তু পরিস্থিতি এখন অগ্নিস্ফুলিঙ্গে ঘি ঢালার মতো।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন