শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

ইরানি হজযাত্রীদের জন্য সৌদির মানবিক সহায়তা, বাদশাহ সালমানের জরুরি নির্দেশ

ইরানি হজযাত্রীদের জন্য সৌদির মানবিক সহায়তা, বাদশাহ সালমানের জরুরি নির্দেশ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ একটি মানবিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, সৌদি আরবে অবস্থানরত সব ইরানি হজযাত্রীকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে, যতদিন না তারা নিরাপদে নিজ দেশে ফিরতে পারেন।

সূত্র জানায়, ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতের কারণে হজে অংশ নিতে যাওয়া কয়েক হাজার ইরানি নাগরিক সৌদিতে আটকে পড়েছেন। বাদশাহ সালমানের নির্দেশে তাদের জন্য আবাসন, খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।

সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হজের পবিত্রতা বজায় রাখতে এবং মানবিক দিক বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সৌদি প্রশাসনের একজন মুখপাত্র বলেন,

“আমরা হজযাত্রীদের ধর্মীয় দায়বদ্ধতা ও নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি, তা তারা যেকোনো দেশের নাগরিকই হোন না কেন।”

এদিকে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনার মধ্যেও মানবিক সহাবস্থানের একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সৌদি আরব একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ভূমিকা পালন করছে। ইরানে ইসরায়েল পরিচালিত সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে দেশটির আকাশপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সৌদিতে আটকে পড়েছেন বহু ইরানি হজযাত্রী। এ অবস্থায় সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ নির্দেশ দিয়েছেন, এই হজযাত্রীদের জন্য সম্মানজনক ও নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ ও সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ জানায়, ইরানে বিস্তৃত ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত থাকার বিষয়টি জানার পর বাদশাহ সালমান জরুরি এই সিদ্ধান্ত নেন।

এই পরিকল্পনার খসড়া তার সামনে উপস্থাপন করেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বাদশাহকে অবহিত করেন যে, ইরানি হাজিরা হজ সম্পন্ন করেও দেশ ফিরতে পারছেন না, ফলে তাদের জন্য তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রয়োজন।

নির্দেশনার পর সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয় আটকে পড়া হাজিদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যতদিন না ইরানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, ততদিন এই হজযাত্রীরা সৌদিতে অবস্থান করতে পারবেন, এবং তা হবে সর্বোচ্চ মর্যাদার সঙ্গে।

চলতি বছর হজ পালন করতে প্রায় ১৬ লাখ মুসল্লি সৌদি আরব সফর করেছেন, যাদের মধ্যে হাজারের বেশি ইরানি হজযাত্রী রয়েছেন। সোমবার (১০ জুন) হজের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পরপরই ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করলে, তেহরান আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করে দেয়। ফলে বহু হজযাত্রী সৌদি আরবেই থেকে যান।

এদিকে ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক, মালয়েশিয়া, কাতার, পাকিস্তানসহ মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও প্রতিক্রিয়া এসেছে—ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের পদক্ষেপকে 'নব্য-নাৎসি ইহুদিবাদ' বলে অভিহিত করেছেন এবং ইরানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন