শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj
ইরানের কঠোর সতর্কতা

ইসরায়েলকে সমর্থন করলে ‘গুরুতর প্রতিক্রিয়া’ আসবে

ইসরায়েলকে সমর্থন করলে ‘গুরুতর প্রতিক্রিয়া’ আসবে
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

ইসরায়েলকে সমর্থন করলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের জন্য ঝুঁকি বাড়বে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে ইরান। দেশটি বলেছে, যদি এই দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের হামলা প্রতিহত করতে সাহায্য করে, তাহলে তাদের এই অঞ্চলে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটি ও নৌজাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে।

ইরানের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, তারা তাদের নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং কোনো বাহিনী বা দেশ যদি ইসরায়েলের পক্ষে এসে তাদের হামলা প্রতিহত করতে চায়, তাহলে ইরান প্রয়োজনীয় কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাতে প্রস্তুত। এতে শুধু ওই দেশের সামরিক ঘাঁটি ও নৌজাহাজ নয়, এমনকি অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যও হামলার আওতায় আসতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সতর্কবার্তা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। ইরানের এই পদক্ষেপ মূলত পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া সীমিত করার চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যাতে তারা সরাসরি কোনো সামরিক হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে তারা ইরানের এই হুমকিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। পাশাপাশি, তারা নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ঘাঁটিগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এদিকে, এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও সামরিক কর্মকাণ্ডে নতুন জটিলতা সৃষ্টি করেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি কোনো ভুল বুঝাবুঝি বা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, তাহলে এটি সম্পূর্ণ অঞ্চলে বিস্তৃত সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
ইরান সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কোনো দেশ যদি ইসরানের হামলা প্রতিহত করতে ইসরায়েলকে সহায়তা দেয়, তবে সেই দেশের পারস্য উপসাগরীয় এলাকায় অবস্থিত সামরিক ঘাঁটি, জাহাজ ও নৌবাহিনী লক্ষ্যবস্তু হবে।

এই কঠোর হুঁশিয়ারি আসে এমন এক সময়, যখন মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ছোড়া ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সহায়তা করেছে।

ইসরায়েলের তীব্র হামলার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তেহরান ব্যাপক প্রতিশোধমূলক আঘাত চালায়। যদিও যুক্তরাজ্যের সরাসরি কোনো সামরিক সহায়তার তথ্য পাওয়া যায়নি, তবু পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে।

এদিকে, ব্রিটিশ সরকার তেহরানে তাদের দূতাবাস কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জোরদার করেছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা তেহরানে নিজেদের দূতাবাস সাময়িকভাবে বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।

ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন, আর বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এই হামলা ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের জবাব হিসেবে চালানো হয়েছে।

ইরান দাবি করেছে, ইসরায়েল তাদের বিভিন্ন শহর, সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক স্থাপনায় একের পর এক হামলা চালিয়ে অন্তত ৭৮ জনকে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেন। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩২০ জন।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন