সব জয়ের পরও থামেননি মেসি, এবার লক্ষ্য ক্লাব বিশ্বকাপের মুকুট!


নিশ্চিতভাবেই লিওনেল মেসিকে বলা যায় আধুনিক ফুটবলের এক জীবন্ত কিংবদন্তি। ক্যারিয়ারে তিনি অর্জনের এমন এক উচ্চতায় পৌঁছেছেন, যেখানে আর কিছু জেতার বাকি নেই বললেই চলে। জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা, ফিনালিসিমা জয়ের পাশাপাশি ক্লাব পর্যায়ে বার্সেলোনার হয়ে জিতেছেন উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, লা লিগা, উয়েফা সুপার কাপসহ অসংখ্য শিরোপা।
ব্যক্তিগত পুরস্কারগুলোর দিক দিয়েও মেসি অনন্য। ব্যালন ডি'অর জিতেছেন রেকর্ডসংখ্যক বার, ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড়, গোল্ডেন বল, গোল্ডেন বুটসহ ফুটবলের প্রতিটি মর্যাদাপূর্ণ সম্মান তার নামের পাশে। মাঠে যা কিছু জয়ের, সবই যেন নিজের করে নিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন জাদুকর।
ফুটবল ইতিহাসে এমন সাফল্যমণ্ডিত ক্যারিয়ার খুব কম খেলোয়াড়েরই আছে। তাই বলা যায়, মেসির নাম এখন কেবল একজন ফুটবলারের নয়, বরং ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়।
অন্য অনেক ফুটবলার এতগুলো ট্রফি জিতে হয়তো ক্লান্ত হয়ে যেতেন—তবে লিওনেল মেসি যেন তেমন নন। প্রতিটি শিরোপা তার কাছে নতুন করে অনুপ্রেরণা, প্রতিটি ম্যাচে জয়ের ক্ষুধা যেন আগের চেয়েও প্রবল। মাঠে ট্রফি থাকলে, মেসি তাকান সেইদিকে; সুযোগ এলেই লড়াই করেন তা নিজের করতে।
এবার সেই লড়াইয়ের মঞ্চ ক্লাব বিশ্বকাপ। যদিও এটি নতুন কোনো মঞ্চ নয় তার জন্য। ২০০৯, ২০১১ ও ২০১৫ সালে বার্সেলোনার হয়ে তিনবার এই ট্রফি জিতেছেন মেসি। তবে এবার নতুন ক্লাব, নতুন পরিবেশ, নতুন ইতিহাস গড়ার সুযোগ। ইন্টার মিয়ামির হয়ে নিজের প্রথম ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে নামছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় আগামীকাল (রোববার) সকাল ৬টায় যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে পর্দা উঠবে ক্লাব বিশ্বকাপের ২১তম আসরের। উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামবে মেসির ইন্টার মিয়ামি। প্রতিপক্ষ আফ্রিকান জায়ান্ট মিশরের আল আহলি।
ম্যাচের আগে ফিফাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৩৭ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন মহাতারকা ক্লাব বিশ্বকাপের গুরুত্ব নিয়ে বলেন,
“এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারাটা সবসময়ই রোমাঞ্চকর। এটা ভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ। আমি যখন অন্য দলে খেলতাম, তখন আমার অভিজ্ঞতা ছিল আলাদা। কিন্তু এখন নতুন ক্লাব, নতুন লক্ষ্য—আমি সত্যিই উচ্ছ্বসিত।”
২০২৩ সালে ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দিয়েই মেসি দলের রূপ বদলে দেন। তার উপস্থিতিতে এমএলএস-এ মিয়ামি জেতে ‘সাপোর্টারস শিল্ড’—যার মাধ্যমে ক্লাব বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে তারা।
মেসি বলেন,
“এখানে অনেক বড় বড় ক্লাব আসছে, যাদের দলে তারকা খেলোয়াড় রয়েছে। এটা শুধু খেলোয়াড়দের জন্য নয়, দর্শকদের জন্যও দারুণ একটি অভিজ্ঞতা। যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকদের সামনে এমন মানের প্রতিযোগিতা আরও জনপ্রিয়তা পাবে।”
দক্ষিণ আমেরিকা ও ইউরোপের হেভিওয়েট ক্লাবগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগকে মেসি দেখছেন ‘বিশেষ অভিজ্ঞতা’ হিসেবে।
শেষবারের মতো হয়তো এই প্রতিযোগিতায় দেখা যাবে তাকে। তাই এবারও চোখ সেই ট্রফির দিকে—আরেকবার চূড়ায় উঠতে চান মেসি, আরেকটি গল্প লিখতে চান নিজের নামের পাশে।
