কেরালায় ব্রিটিশ যুদ্ধবিমানের জরুরি অবতরণ


ভারতের আকাশে এক রোমাঞ্চকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যখন যুক্তরাজ্যের বিমান বাহিনীর একটি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান জ্বালানি সংকটে পড়ে। গভীর রাতে আকাশে টহল দিতে দিতে জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে, পাইলট দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন এবং ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার একটি বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন।
বিশ্বের অন্যতম সর্বাধুনিক এবং চতুর্থ প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমানটি মূলত প্রশিক্ষণ বা স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে উড়ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। আকাশে জ্বালানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (ATC) অনুমতি নিয়ে ভারতের আকাশসীমায় প্রবেশ করেন এবং নিরাপদে অবতরণ করেন বিমানটি।
সূত্র জানায়, অবতরণের পরপরই বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয় এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্রিটিশ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। বিমানটি পরবর্তীতে রিফুয়েলিংয়ের মাধ্যমে পুনরায় যাত্রার জন্য প্রস্তুত করা হয়।
এই ঘটনায় ভারত-যুক্তরাজ্য সামরিক সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার পারস্পরিক নির্ভরতার একটি বাস্তব উদাহরণ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা।
ভারতের আকাশে একটি নাটকীয় সামরিক মুহূর্ত তৈরি হয় যখন ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৩৫বি লাইটনিং টু যুদ্ধবিমান জ্বালানি সংকটে পড়ে এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালার তিরুবনন্তপুরম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, শনিবার গভীর রাতে ভারত মহাসাগরের ওপর একটি নিয়মিত মিশনের সময় যুদ্ধবিমানটি এ সংকটে পড়ে। এরপরই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতীয় আকাশসীমায় প্রবেশ করে এবং নিরাপদে অবতরণ করে বিমানটি।
বিশ্বের অন্যতম উন্নত এই পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমানটি বর্তমানে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মোতায়েন থাকা যুক্তরাজ্যের বিমানবাহী রণতরী এইচএমএস প্রিন্স অব ওয়েলস-এর স্ট্রাইক গ্রুপের অংশ। ভারতীয় নৌবাহিনীর সঙ্গে সম্প্রতি একটি যৌথ সামুদ্রিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে এই স্ট্রাইক গ্রুপ।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের জরুরি অবতরণ বিরল হলেও অস্বাভাবিক নয়। এফ-৩৫বি সংস্করণটি স্বল্প রানওয়ে এবং উল্লম্ব অবতরণের জন্য বিশেষভাবে তৈরি, যা এটিকে যুদ্ধজাহাজ কিংবা সীমিত পরিসরের এয়ারস্ট্রিপেও নামার সুযোগ করে দেয়।
তবে বিমানটি কেন নিজ রণতরীতে ফিরে যেতে পারেনি, তা এখনো নিশ্চিত নয়। ধারণা করা হচ্ছে, প্রিন্স অব ওয়েলস রণতরীর আশপাশে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বিমানটি নিরাপদভাবে নামতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন নির্মিত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মাল্টিরোল ফাইটার জেটগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত। এতে রয়েছে স্টেলথ প্রযুক্তি, উন্নত সেন্সর সিস্টেম, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সক্ষমতা এবং রিয়েলটাইম তথ্য আদান-প্রদানের সুবিধা—যা আধুনিক যুদ্ধের মাঠে এটিকে ভয়ঙ্কর ও কার্যকর এক অস্ত্রে পরিণত করেছে।
এখনও পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা লকহিড মার্টিন এই ঘটনায় আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে জানা গেছে, রোববার সকাল পর্যন্ত যুদ্ধবিমানটি কেরালার বিমানবন্দরেই নিরাপদে অবস্থান করছিল।
