শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

ফুটবলের অদম্য যোদ্ধা: ৫৮ বছরেও খেলে যাচ্ছেন কিং কাজু

ফুটবলের অদম্য যোদ্ধা: ৫৮ বছরেও খেলে যাচ্ছেন কিং কাজু
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

জাপানি ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি কাজুইউশি মিউরা যেন সময়ের হিসাব মানেন না! ৫৮  বছর বয়সে পা রেখেও পেশাদার ফুটবলে তার যাত্রা থামেনি। বরং প্রতিবারই নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন এই স্ট্রাইকার। চলতি বছরেও তিনি গড়েছেন এক অনন্য রেকর্ড—বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী পেশাদার ফুটবলার হিসেবে মাঠে নামার।

বর্তমানে পর্তুগালের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব ‘ভিজেলেন্সে’-তে ধারে খেলছেন মিউরা। এর আগে জাপানের ইয়োকোহামা এফসি-র হয়ে দীর্ঘদিন মাঠ মাতিয়েছেন। তবে বয়স বাড়লেও থেমে নেই তার ফিটনেস, প্যাশন আর খেলার প্রতি দায়বদ্ধতা।

১৯৮৬ সালে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ব্রাজিলের ক্লাব সান্তোসে। এরপর পাড়ি দিয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে—জাপান, ব্রাজিল, ইতালি, ক্রোয়েশিয়া ও পর্তুগালসহ অনেক দেশের ক্লাবে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলেও মিউরার অবদান কম নয়—জাপানের হয়ে ৮৯ ম্যাচে করেছেন ৫৫ গোল।

‘কিং কাজু’ নামে পরিচিত এই স্ট্রাইকার কেবল বয়স নয়, চ্যালেঞ্জকেও জয় করেছেন। ফুটবল বিশ্বে তিনিই একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি ৫টি আলাদা দশকে পেশাদার ম্যাচে অংশ নিয়েছেন।

মিউরার মতে,
“আমি ফুটবলকে ভালোবাসি। যতদিন পারব, খেলে যাব। বয়স কেবল একটা সংখ্যা।”

তার এই অদম্য মনোভাবই প্রমাণ করে, অনুপ্রেরণার জন্য বয়স কোনো সীমা নয়। ফুটবলে প্যাশনের প্রতীক হয়ে উঠেছেন কাজুইউশি মিউরা, যিনি দেখিয়ে দিয়েছেন—স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব, যদি ইচ্ছা থাকে জোরালো
জীবনের ষষ্ঠ দশক পেরিয়েও ফুটবল মাঠে দৌড়াচ্ছেন ‘কিং কাজু’। ৫৮ বছর বয়সেও জাপানের চতুর্থ স্তরের পেশাদার ফুটবল ক্লাব অ্যাতলেতিকো সুজুকার হয়ে মাঠে নামলেন কাজুইউশি মিউরা—আর তাতেই লিখলেন নতুন এক অধ্যায়। এটি তার পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারের ৪০তম মৌসুম!

রবিবার জাপান ফুটবল লিগের এক ম্যাচে ৮২তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন মিউরা। ২-১ গোলের জয়ে তার দল মাঠ ছাড়ে, আর সেই জয়ের অংশ হতে পেরে নিজেও বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। ম্যাচ শেষে এই অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার বলেন,
“এই বয়সে এসেও দলের জয়ে অবদান রাখতে পারাটা দারুণ অনুভূতি। সতীর্থদের সাহায্য ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আমি এখন আরও ভালো করার জন্য কাজ করছি।”

১৯৮৬ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোসে পেশাদার ফুটবলে পথচলা শুরু মিউরার। এরপর খেলেছেন ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালে। গত দুই মৌসুম তিনি খেলেছেন পর্তুগালের দ্বিতীয় স্তরের ক্লাব অলিভেইরেন্সে। সেখানে ৯টি ম্যাচ খেলার পর ২০২4 সালে দেশে ফিরে যোগ দেন অ্যাতলেতিকো সুজুকায়, ইয়োকোহামা এফসি থেকে ধারে।

জাপানের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তোলেন ১৯৯০ সালে। যদিও ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পাওয়ায় হতাশ হন অনেক ভক্ত। তবু জাতীয় দলে তার রেকর্ড নজরকাড়া—৮৯ ম্যাচে ৫৫ গোল।

‘কিং কাজু’ শুধু মাঠেই নয়, জাপানের ফুটবল সংস্কৃতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও এক অনন্য নাম। জে-লিগের প্রথম দিনগুলোতে তার উপস্থিতি ফুটবলকে দেশজুড়ে জনপ্রিয় করে তোলে।

আজও যখন অনেকেই অবসর নিয়ে ঘরোয়া জীবনে মন দেয়, তখন মিউরা ফুটবল মাঠেই জীবনের স্বপ্ন খুঁজে পান। বয়স তার কাছে শুধুই একটি সংখ্যা। ৪০ বছরের ক্যারিয়ার আর অদম্য প্যাশনে তিনি ফুটবল ইতিহাসে নিজেকে অমর করে তুলেছেন।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন