শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

নেতানিয়াহুর মন্তব্যে উত্তাপ: খামেনি হত্যায় মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত বন্ধ হবে?

নেতানিয়াহুর মন্তব্যে উত্তাপ: খামেনি হত্যায় মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত বন্ধ হবে?
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা যখন চরমে, তখন এক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার মতে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যা করা হলে যুদ্ধ আরো ঘনীভূত হবে না, বরং তা থেমে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি।

নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন মন্তব্য সরাসরি রাষ্ট্রপ্রধান হত্যার উসকানি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন,

"খামেনিই এই সংঘাতের মূল কারিগর। তাকে সরিয়ে দিলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ও মনোবল ইরান হারাবে।"

তবে তিনি সুনির্দিষ্ট করে কোনো সামরিক পরিকল্পনার কথা বলেননি। তবে ইঙ্গিত দেন, ইসরায়েল পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে ‘সব ধরনের অপশন’ বিবেচনায় রেখেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহুর বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা উসকে দিতে পারে, যেখানে আগেই ইরান ও ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলায় জড়িয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে একটি রাষ্ট্রীয় প্রধানের হত্যার সম্ভাব্যতা নিয়ে এমন প্রকাশ্য আলোচনা অভূতপূর্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন তারা।

ইরান থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না এলেও, দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ইতোমধ্যেই সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে যখন প্রশ্ন করা হয়, তারা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে লক্ষ্যবস্তু করার পরিকল্পনা করছে কি না, তখন তিনি প্রতিক্রিয়া দেন, “আমরা যা দরকার তাই করছি।”

নেতানিয়াহু বলেন, ইরান দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে এবং ইসরায়েলকে পরমাণু অস্ত্রের হুমকিতে রেখেছে। তিনি দাবি করেন, ইরান ‘চিরস্থায়ী যুদ্ধ’ চাইছে এবং ইসরায়েলকে রক্ষা করতে হলে ‘অশুভ শক্তির’ বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।

অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিন মার্কিন কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন, ইসরায়েল এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু ট্রাম্প তা ‘ভালো ধারণা’ হিসেবে দেখেননি।

গত সপ্তাহে ইরানে হামলার পর ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে বেশ কয়েকবার কথোপকথন হয়েছে। যদিও নেতানিয়াহু এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে স্পষ্টতা এড়িয়ে গিয়েছেন, তিনি বলেছেন, অনেক মিথ্যা খবর ছড়ানো হচ্ছে এবং এসব নিয়ে তিনি আলোচনা করতে আগ্রহী নন। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, “আমরা যা করতে হবে তা করব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও জানে কী তাদের জন্য ভালো।”

এই দ্বন্দ্ব এবং মতবিরোধের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন