পারমাণবিক শক্তিচালিত রণতরী জেরাল্ড আর. ফোর্ড ইরানের দিকে যাত্রা শুরু


মার্কিন নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক ও সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড মোতায়েনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা হয়েছে। শিগগিরই এটি মধ্যপ্রাচ্যের দিকে, বিশেষ করে ইরানসংলগ্ন অঞ্চলের উদ্দেশ্যে রওনা হবে বলে জানিয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ও সিএনএন।
বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী এ রণতরীর মোতায়েন মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার এবং ইরানকে সামরিক বার্তা দেওয়ার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়াশিংটন।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা আরও বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছে। অঞ্চলের বিভিন্ন ঘাঁটিকে সক্রিয় করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র বাইরে থেকেও আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম আনয়ন করছে। এই কৌশলগত পুনর্বিন্যাসের সর্বশেষ সংযোজন হলো মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে আধুনিক এবং বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড।
সিএনএনের সিনিয়র প্রতিবেদক জ্যাকারি কোহেন এক মার্কিন প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাতে জানান, ১,১০০ ফুট দীর্ঘ এবং পারমাণবিক শক্তিচালিত ইউএসএস ফোর্ড আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইউরোপে পাঠানো হতে পারে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী হিসেবে এই অঞ্চলে মোতায়েন হতে যাচ্ছে। এর আগে পারস্য উপসাগরে মোতায়েন রয়েছে ইউএসএস কার্ল ভিনসন, এবং এ সপ্তাহের শুরুতে ইউএসএস নিমিৎজ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে মোতায়েনের জন্য রওনা হয়েছে।
প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত ইউএসএস ফোর্ড মূলত গত বছরই ভূমধ্যসাগরে মোতায়েনের পরিকল্পনায় ছিল। তবে বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ রণতরীর আগমনকে অনেকেই মার্কিন প্রতিরক্ষা কৌশলের অংশ হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের একটি বার্তা বহন করছে।
এছাড়া, ইউএসএস টমাস হাডনার নামের একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম যুদ্ধজাহাজকে পশ্চিম থেকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। একইসঙ্গে আরও একটি মিসাইল ডেস্ট্রয়ারকেও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে, যাতে প্রয়োজনে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হয়। হোয়াইট হাউসের অনুরোধে এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ।
মোটকথা, মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে যুদ্ধের শঙ্কা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও তার অবস্থান স্পষ্ট করছে—তাদের সামরিক প্রস্তুতি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সজাগ ও সংঘর্ষ-প্রস্তুত।
