টেস্ট দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন শান্ত


বাংলাদেশ টেস্ট দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে শিগগিরই। ক্রিকেট বিষয়ক বিশ্বস্ত সূত্র ক্রিকবাজ জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষে আর অধিনায়কের দায়িত্বে থাকছেন না নাজমুল হোসেন শান্ত।
টেস্ট নেতৃত্ব পাওয়ার পর শান্ত খুব বেশি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করার সুযোগ পাননি। তবে তার নেতৃত্বে দল ধারাবাহিক সাফল্য পায়নি, আর ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও ছিল ওঠানামার মধ্যে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই সম্ভবত বোর্ডের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বোর্ড এখন নতুন টেস্ট অধিনায়কের সন্ধানে রয়েছে। সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে সাকিব আল হাসান, লিটন দাস কিংবা মেহেদী হাসান মিরাজের।
অবশ্য এখনই বিসিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। সিরিজ শেষ হওয়ার পরই এ বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছে। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে ২৫ জুন, কলম্বোতে। সিরিজ শেষে শান্তর টেস্ট অধিনায়কত্ব অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে—এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলো।
শ্রীলঙ্কা সফর শেষেই বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দায়িত্ব ছাড়তে যাচ্ছেন—এমনটাই জানিয়েছে ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ। বাঁহাতি এই ব্যাটার সফর শেষের পর আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সিরিজ শেষে ঘোষণা আসবে নাকি কিছুটা সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে আলোচনার ওপর।
বিসিবির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র ক্রিকবাজকে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় শান্ত ক্ষুব্ধ এবং নিজের সিদ্ধান্তে তিনি অনড়। সূত্রটির ভাষায়, “আমার মনে হয় না শ্রীলঙ্কা সিরিজের পরও শান্ত অধিনায়ক হিসেবে থাকবেন। ও যেটা চেয়েছে, সেটা হয়নি—এতেই সে খুশি নয়।”
জানা গেছে, এক বছরের জন্য টেস্ট দলের দায়িত্ব পাওয়ার পর শান্ত ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলোচনা করে অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সম্প্রতি বিসিবি হঠাৎ করেই ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে শান্তকে সরিয়ে দেয় এবং তার জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে। এর আগেই শান্ত স্বেচ্ছায় টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন ব্যাটিংয়ে মনোযোগ বাড়ানোর জন্য। সেই সময় তিনি বোর্ডকে জানিয়েছিলেন যে তিনি টেস্ট এবং ওয়ানডে ফরম্যাটে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে আগ্রহী।
তবে ওয়ানডে অধিনায়ক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শান্তর কাছে ছিল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। গত ১২ জুন এক জরুরি জুম বৈঠকের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও শান্ত আগে থেকে কিছুই জানতেন না। সেই সময় তার প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে একটি আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও, বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিমের ফোন পাওয়ার পর তিনি সেই বৈঠকে অংশ নেননি।
ক্রিকবাজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শান্ত ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে পরিকল্পনাও ভাগাভাগি করেছিলেন। ওয়ানডে দলের কৌশলগত দিক ও ব্যক্তিগত ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয় তাদের মধ্যে। তাই হঠাৎ করে নেতৃত্ব পরিবর্তন তাকে মানসিকভাবে প্রভাবিত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, শান্তর কাছ থেকে অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া হয়নি। বরং বোর্ডের অভ্যন্তরীণ আলোচনার ভিত্তিতে সমন্বিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, শান্ত এই সিদ্ধান্ত খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতায় গ্রহণ করেছেন।
তবে বাস্তবতা বলছে, শান্ত এই মুহূর্তে টেস্ট নেতৃত্ব ছাড়ার দিকেই এগোচ্ছেন এবং শ্রীলঙ্কা সিরিজই হতে পারে তার অধিনায়কত্বের শেষ অধ্যায়।
