বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্য সাহার ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ি....!!

চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্য সাহার ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ি....!!
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

বৃটিশ শাসনামলের এক ঐতিহাসিক নিদর্শন শ্রী লক্ষ্মীচরণ সাহার ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ি।

জানা যায়, ১৮৯০ সালে জমিদার লক্ষীচরণ সাহা জমিদারির প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রদর্শনের জন্য এই দ্বিতল বাড়িটি নির্মাণ করেন। জমিদারি প্রথার ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ করে থাকা বাড়িটির মূল প্রবেশ পথ লোহার বিশাল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই ক্ষয়ে যাওয়া ছাদের আস্তরন আর দেয়ালের শেওলাগুলো দেখে মনে হবে ইতিহাসও আজ ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়ছে।

লাল ইট সুরকির গাঁথুনি দিয়ে তৈরি ভবনের দুপাশে দুটি সুউচ্চ গম্বুজ স্বগর্বে মাথা তুলে ঘোষণা করছে জমিদার বংশের ঐতিহ্যের কথা।

বাড়িটিতে দৃষ্টিন্দন শান বাঁধানো পুকুর ঘাট আর পূজা মন্ডপ অস্তিত্বশূন্য হতে চললেও একেবারে বিলীন হয়ে গেছে সেরেস্তা ঘর, ধানের গোলা, রান্নাঘর আর নাচঘর। বর্তমানে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বাড়িটিতে বসবাস করছেন লক্ষ্মীচরণ সাহার বংশধররা।

বর্তমানে এই জমিদার বাড়ি ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে দিন দিন আগ্রহের বিষয়বস্তু হয়ে ওঠেছে।

জানা যায়, ১৯৭৪ সালে এই জমিদার বাড়ির সন্তান প্রযোজক সত্য সাহার প্রযোজনায় নির্মিত “অশিক্ষিত” ছবির শ্যুটিং করতে এই বাড়িতে ১৭দিন অবস্থান করেছিলেন খ্যাতিমান চলচ্চিত্র অভিনেতা রাজ্জাক, নায়িকা অঞ্জনাসহ ছবির কলাকৌশলীরা।

এছাড়া ১৯৮০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা চলচ্চিত্র “ছুটির ঘন্টা” ছবির বেশ কিছু দৃশ্য ধারণ করা হয় এ বাড়ি থেকে।

জমিদার প্রসন্ন সাহার দুটি ঘোড়ার গাড়ি ও দু'জন নেপালি দারোয়ান ছিলো। সেই ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে আদালত ভবনে যেতেন জমিদার প্রসন্ন সাহা। ছিলো অর্ধশতাধিক চাকর বাকর, নয় জোড়া হালের গরু পুকুর ভর্তি মাছ আর গোলা ভরা ধান। প্রতিদিন একবেলায় প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ মানুষের  রান্না হতো এই বাড়িতে।

প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার কৃষককের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হতো রাজ পুণ্যাহ অনুষ্ঠান।

এককালে বিত্ত-বৈভব প্রদর্শনের জন্য নির্মিত জমিদার বাড়ি বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকলেও নেই সেই জৌলুশ আর চাকচিক্যতা।

জমিদারের জমিদারিত্ব বিলীন হয়ে গেলেও বহু ইতিহাসের রাজসাক্ষীর মত অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন এই জমিদার বাড়ী। এই জমিদারী কিংবা জমিদার বাড়ির কথা বর্তমান প্রজন্মের কাছে যেন এক রূপ কথার গল্প।

তবে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব কিংবা এই সব পুরনো ঐতিহ্য সংরক্ষণে পুরাকীর্তি বিভাগের সুদৃষ্টির অভাবে আজ হারিয়ে যাবে পথে এই ঐতিহাসিক নিদর্শন।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ

আরও পড়ুন