মুরাদনগরে ধর্ষণ ভিডিও ছড়ানোর নেপথ্যে দুই ভাইয়ের পুরোনো শত্রুতা


কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর পেছনে ছিল দুই সহোদর শাহ পরান ও ফজর আলীর দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ। র্যাব জানায়, ছোট ভাই শাহ পরান বড় ভাই ফজর আলীর ওপর প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটান।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে শাহ পরান একটি সংঘবদ্ধ দল (মব) তৈরি করে ভুক্তভোগী নারী ও তার ভাই ফজর আলীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এরপর ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, কুমিল্লার মুরাদনগরের বাহেরচর গ্রামের শহিদের দুই ছেলে—ফজর আলী ও শাহ পরান—দীর্ঘদিন ধরে ওই নারীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। ঘটনার প্রায় দুই মাস আগে এক সালিশ বৈঠকে বড় ভাই ফজর আলী ছোট ভাইকে চড় মারেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন শাহ পরান।
সাজ্জাদ হোসেন জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর বাবা-মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে ফজর আলী টাকার অজুহাতে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন। এরপর শাহ পরান ও তার সহযোগীরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটান এবং ভিডিও ধারণ করে তা ইমো অ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
র্যাব জানায়, ঘটনার পর শাহ পরানসহ অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। তবে প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন এবং জানিয়েছেন, বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নিতেই তিনি এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
র্যাব আরও জানায়, শাহ পরান ইমো অ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে লোকজন ডেকে এনে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। তাকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের বাহেরচর গ্রামে এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ২৯ জুন ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ধর্ষণে অভিযুক্তসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এন কে/বিএইচ
