সরকারি চাকরি অধ্যাদেশে বড় পরিবর্তন: অপসারণ নয়, বাধ্যতামূলক অবসর


সরকারি চাকরি থেকে সরাসরি অপসারণ বা বরখাস্তের বিধান বাদ দিয়ে এবার বিকল্প ব্যবস্থার পথে হাঁটছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী, অসদাচরণের অভিযোগে এখন থেকে সরাসরি বরখাস্ত নয়-পেনশন ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা বহাল রেখে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো যাবে সরকারি কর্মচারীদের।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সচিবালয়ের কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গঠিত পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়াটি বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এর আগে, গত ২৫ মে জারি করা অধ্যাদেশে চার ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই কেবল কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করার বিধান রাখা হয়েছিল। এ ধারা ঘিরে ব্যাপক বিরোধিতা তৈরি হলে সরকার ৪ জুন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে। কমিটির সুপারিশে সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়।
বর্তমানে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী, কেউ ২৫ বছর চাকরি করলে সরকার জনস্বার্থে কারণ না দেখিয়ে তাকে অবসরে পাঠাতে পারে। সংশোধনের ফলে ওই ধারা আরও কার্যকর ও সময়সাশ্রয়ীভাবে প্রয়োগ করা যাবে।
এ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়েও নতুন ব্যাখ্যা সংযোজন করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত জরুরি প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কর্মস্থলে না থাকলেও, সেটিকে আর শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে না।
সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর বলেন, “অধ্যাদেশের সবচেয়ে বিতর্কিত ‘অনানুগত্য’ ধারা বাদ দেওয়া হচ্ছে, যা কার্যত পুরো অধ্যাদেশকে অকার্যকর করে দিচ্ছিল।” তিনি আরও জানান, কারণ দর্শানো, তদন্ত কমিটি গঠন এবং নারী কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে তদন্ত কমিটিতে নারী সদস্য রাখার প্রস্তাবগুলো সরকার ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছে।
সংশোধিত অধ্যাদেশটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। অনুমোদনের পরই তা কার্যকর হবে।
এন কে/বিএইচ
