নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বলা যায় না: মহিউদ্দিন


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি এবং ভোটের হার কম হলেও নির্বাচন সুন্দর শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষক, উন্নয়ন ও মানবাধিকার কর্মী মো. মহিউদ্দিন আমিন। তিনি বলেছেন, তবে এটিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন বলা যায় না।
তিনি বলেন, ঢাকার বেশ কয়েকটি আসনে আমি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। উন্নয়ন সংস্থা (জি.ইউ.এস) থেকে দেশের ১৯৬টি আসনে ১০৫৮ জন পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন।
সারাদেশের পর্যবেক্ষকসহ আমি বিভিন্ন নির্বাচন কেন্দ্র ঘুরে আমার মনে হয়েছে সব আসনে ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা আশানুরূপ নয়।
নির্বাচনে ব্যাপকভাবে কোনো হাঙ্গামা বা অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। আমাদের পর্যবেক্ষকরা সারা দেশের বিভিন্ন আসনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন শেষে তারা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করলে তখন আমরা সত্যিকারের চিত্র বুঝতে পারব। মোটের ওপর বলতে গেলে নির্বাচনে ভোট কম পড়েছে তবে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে।
কক্সবাজারের চকরিয়া, চট্টগ্রামের পটিয়া, বাশখালী, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, বরিশাল, বগুড়া, কুষ্টিয়া, সিলেট, খুলনা, গাইবান্ধা, নারায়নগঞ্জ, কুমিল্লাসহ কয়েকটি জেলা থেকে আমাদের পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, সেখানে কেন্দ্র থেকে কিছু প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রভাবশালী প্রার্থীর লোকজনের দ্বারা ভোটকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
নির্বাচনের দিন সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন থাকায় এমনিতেই মারামারি হওয়ার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। যারা সংঘর্ষ বাধাতে পারত তারা সশস্ত্র বাহিনীর সামনে এসে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সুযোগ পায়নি।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টরা কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি করেনি বলে সারা দেশে নির্বাচন নিয়ে তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা দেখা যায়নি। নির্বাচন কেন্দ্রগুলো ছিল প্রভাবশালী প্রার্থীদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে। ফলে কোথাও সাংঘর্ষিক কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। নির্বাচনের আগেই মানুষ ধরেই নিয়েছিল যেভাবেই হোক নির্বাচনে বর্তমান সরকারের সমর্থিতরাই জিতে যাবে। সুতরাং এখানে বাড়তি এফোর্ট দেওয়ার মানসিকতা ভোটারদের মধ্যে ছিল না।
এছাড়া নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তারাও বেশিরভাগ আওয়ামী লীগেরই দলীয় লোক। সুতরাং নৌকা জিতুক, ট্রাক জিতুক, কলার ছড়ি বা ঈগল জিতুক ঘুরেফিরে বিষয়টি একই রকম।
এসময় তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সারাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট প্রদান করবার জন্য জি,ইউ,এস'র পর্যবেক্ষকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
এছাড়াও তিনি আশা প্রকাশ করেন, অবিলম্বে সারাদেশের সঠিক ও পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট সংগ্রহ করে শীঘ্রই একটি চুড়ান্ত পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক মহলে প্রকাশ করা হবে।
