শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

নতুন বাংলাদেশে নতুন কাগজ

নতুন বাংলাদেশে নতুন কাগজ
লেখক
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

‘নির্ভয়ে সত্য বলার সাহসী দৈনিক’ স্লোগান নিয়ে আরেকটি সংবাদপত্র। কি আঁতকে উঠলেন? হুম, আঁতকে ওঠার মতোই খবর। ভাষার মাসে নতুন আরেকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ‘নতুন কাগজ’-এর যাত্রা শুরু হলো আজ।

বলাই যায়, নতুন বাংলাদেশে আগামীর সম্ভাবনা নিয়ে ‘নতুন কাগজ’ পাঠকের মন জয় করতে সক্ষম হবে। হবে নতুন বাংলাদেশের নতুন দিনের দৈনিক।

সত্য উদ্ঘাটন, অনুসন্ধান ও প্রকাশে নির্ভীক হতে হবে। অর্ধ সত্য নয়, প্রকাশ হবে অখণ্ড ও পূর্ণ সত্য। নির্ভয়ে সত্য বলার সাহসী দৈনিক নতুন কাগজ হবে সত্য প্রকাশে আপসহীন-এমন সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আর পরিকল্পিত চিন্তার অনুসন্ধানে এই কাগজ এগিয়ে যাবে তার অভিষ্ট লক্ষ্যে।

অন্যায়, অনিয়ম-দুর্নীতি ও সত্যের সঙ্গে আপস না করা গণমানুষের পত্রিকা হবে ‘নতুন কাগজ’। ধনী-গরিব, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবার পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে আজ যাত্রা শুরু করলো ‘নতুন কাগজ’।

তাই নতুনত্ব আর তারুণ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে দুর্বারগতিতে। নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে জায়গা করে নিতে হবে পাঠকের অন্তরে। উন্নয়ন-সম্ভাবনার খবরের পাশাপাশি অনিয়ম ও দুর্নীতির অনুসন্ধানমূলক খবর হবে নতুন কাগজ-এর অগ্রযাত্রার সাথী।

প্রশ্ন হচ্ছে- দেশে এত সংবাদপত্র থাকার পরও কেন আরেকটি দৈনিক। বর্তমানে দেশের চলমান আমাদের সংবাদপত্রগুলো পাঠক মনে-মননে রেখাপাত করছে কীভাবে-কতটুকু? কতটুকুইবা গণতন্ত্র নির্মাণ, দেশ ও দশের উপকারে আসছে। দেখা যাচ্ছে অনেক সম্পাদকই সংবাদপত্রের কনসেপ্ট ও চরিত্র গুলিয়ে ফেলছেন। সরে গেছেন মূলধারা থেকেও। আর বিগত দিনে আবদ্ধ হয়েছিলেন মুষ্টিমেয় চরম গোষ্ঠীবদ্ধতায়।

আমাদের মনে আছে নিশ্চয়, ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হাইকোর্ট একটি রায়ের পূর্ণাঙ্গ বিবরণীতে মন্তব্য করেছেন, দুর্নীতি আমাদের সমাজের চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এবং গণতন্ত্রের কার্যকর ও নির্ভীক প্রহরী হিসেবে সংবাদপত্রের কাজ করা উচিত। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতিকে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ বিবরণীতে বলা হয়, ‘সংবাদপত্র সমাজের সবস্তরের মানুষের মুখপাত্র হয়ে গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সংবাদপত্র সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করে।’

কিন্তু আসলে কি তা হয়েছে? মোটেই না? আমরা দেখেছি-সরকার পতনের পর তৎকালীন সময়ের বেশ কিছু দাপটে সাংবাদিক দেশত্যাগের জন্য কত কিছুই না করেছে। কেউ বা পালাতে পেরেছে। কেউবা রয়েছে জেলে। এমনকি জাতীয় মসজিদের খতিবকেও আমরা পালাতে দেখেছি। যা থেকে সহজেই অনুমেয় যে আমরা তথা দেশের মানুষ কতটা দুর্নীতির মধ্যে নিমজ্জিত ছিলাম।

আর আমাদের দেশের চলমান সংবাদপত্রগুলো কে কী ভূমিকা রেখেছে তা আমরা দেখেছি। শুধু তাই নয়, আমরা এমনও দেখেছি যে দেশের টিভি মিডিয়াগুলোতে টকশোর নামে ডেকে নিয়ে কিভাবে হেনস্তা করা হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে সত্য বলা মানুষগুলোকে টকশো করা থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। আর ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই তথা ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন স্তরের মতো মিডিয়াতেও আমূল পরিবর্তন এসেছে। যা সত্যিই দেশ, দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রের জন্য সুখবর।

যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকতার দর্শনও পাল্টেছে। সংবাদপত্র স্থান-কাল-পাত্র নিরপেক্ষ নয়। যে সংবাদপত্র জনকল্যাণের পক্ষে কাজ করে, সত্য সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করে, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চায়, সমাজের অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে, সে পত্রিকাই আদর্শবাদী।

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ‘নতুন কাগজ’ হবে দেশের একটি পাঠক প্রিয়পত্রিকা। এ পত্রিকার জন্ম থেকেই সঙ্গে আছে এবং থাকবে আমৃত্যু। এটা আমার গর্ব ও গৌরব। আর পত্রিকাটির সাফল্য এবং দীর্ঘ জীবন কামনা করি। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে ‘নতুন কাগজ’-এর জন্ম। ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের মাস। আর এই‘নতুন কাগজ’ও আন্দোলনের পত্রিকা। সেই আন্দোলন কোনো দলের নয়, জনগণের আন্দোলন। গণমানুষের আন্দোলন।

প্রত্যাশা থাকবে, কোনো সত্য আংশিক প্রকাশ করবে না ‘নতুন কাগজ’। মাথানত করবে না অন্যায়-দুর্নীতির কাছে। ফলেই গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে ‘নতুন কাগজ’ পাঠকদের আস্থার শীর্ষে থাকবে। সময়ের প্রবাহে সত্যের অনুসন্ধানে বদলে যাবে ‘নতুন কাগজ’। আর এ বদলে যাওয়াকে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। কারণ ‘নতুন কাগজ’ হবে গণমানুষের মুখপত্র।

বাঙালি সংস্কৃতি ও আন্দোলন-সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী হিসেবে পাশে থাকবে ‘নতুন কাগজ’। নতুন বাংলাদেশের আজকের এই দিনে দাঁড়িয়ে এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।

গণমানুষের ভালোবাসা নিয়ে ‘নতুন কাগজ’-এর আগামীর পথচলা শুভ ও সুন্দর হোক। আগামী অগ্রযাত্রার সাফল্যে শুভ কামনা রইল।

লেখক: মশিউর রহমান রুবেল, সাংবাদিক।


মশিউর/রহমান/অভিমত/রুবেল
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন