ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ১০টি পরিচ্ছন্ন দেশ


এই ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন বিশ্বের পরিচ্ছন্ন দেশ থেকে ।
একটা সময় ছিল, যখন শুধু ভ্রমণের আনন্দ খুঁজেই মানুষ দেশ বেছে নিত। এখন সময় বদলেছে। করোনোত্তর পৃথিবী আর জলবায়ু সংকট আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। এখন আমরা শুধু সৌন্দর্য খুঁজি না, খুঁজি বিশুদ্ধ বাতাস, পরিচ্ছন্ন রাস্তা, সবুজ গাছপালা, একটা প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ।
ঠিক এই প্রেক্ষাপটে ‘এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্স (ইপিআই)’ নামের একটি বৈশ্বিক গবেষণা সংস্থা প্রতি বছর পরিবেশের মানদণ্ডে দেশগুলোর অবস্থান প্রকাশ করে। ২০২৫ সালের তালিকায় উঠে এসেছে এমন ১০টি দেশের নাম। যারা শুধু উন্নত নয়, পরিবেশের প্রতিও সমান সচেতন।
চলুন, ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এমন ১০টি পরিচ্ছন্ন, শৃঙ্খলিত আর সবুজ দেশের সন্ধান দেই।
এস্তোনিয়া (স্কোর: ৭৫.৩)
তালিকার এক নম্বরে থাকা এস্তোনিয়া যেন ইউরোপের হারিয়ে যাওয়া এক সবুজ রত্ন। এখানে শহরের মধ্যেই দেখা মেলে বনভূমি আর কাঠের পুরনো বাড়ি। গাড়ির চেয়ে মানুষ হাঁটতেই বেশি পছন্দ করে। বাতাস এতটাই পরিষ্কার যে, সকালে ঘুম ভাঙতেই জানালা খুলে নিশ্বাস নিতে ইচ্ছা করে।
এশিয়ার এই ৭ সৈকত এখন বেশ জনপ্রিয়, যাবেন নাকি?এশিয়ার এই ৭ সৈকত এখন বেশ জনপ্রিয়, যাবেন নাকি?
লুক্সেমবার্গ (স্কোর: ৭৫.০)
ছোট দেশ, কিন্তু বড় নজির। লুক্সেমবার্গের রাস্তা ঝকঝকে, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রিত, আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক। সবুজ খোলা জায়গা আর ছিমছাম শহরের মিশেলে একটা শান্ত, মসৃণ জীবনের আভাস মেলে এখানে।
জার্মানি (স্কোর: ৭৪.৬)
শিল্পায়নের জন্য পরিচিত জার্মানি এখন পরিচিত এক সবুজ বিপ্লবের দেশ হিসেবে। সাইকেল পথ, বৈদ্যুতিক গাড়ি, আর পরিকল্পিত নগরায়ন দেশটিকে করে তুলেছে বাসযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন। শহরে থেকেও গাছগাছালির ছায়া পাওয়া যায়।
ফিনল্যান্ড (স্কোর: ৭৩.৭)
এই দেশের হ্রদগুলো যেন কাঁচের মতো স্বচ্ছ। বাতাসে ধুলোর চেয়ে গন্ধ বেশি, গাছের গন্ধ। মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেছে, যেন তারা একে অপরের আত্মীয়।
যুক্তরাজ্য (স্কোর: ৭২.৭)
পুরোনো ঐতিহ্য আর আধুনিক সবুজ নীতির এক অপূর্ব সংমিশ্রণ যুক্তরাজ্যে। সেখানে প্লাস্টিক কমানো, গাছ লাগানো আর ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা পরিবেশবান্ধব করার কাজ চলছে একেবারে নীতির মধ্যেই।
সুইডেন (স্কোর: ৭০.৫)
পরিচ্ছন্নতা শুধু শারীরিক নয়, সাংস্কৃতিক ব্যাপারও। সুইডেন তার নাগরিকদের ছোটবেলা থেকেই শেখায়, ‘বর্জ্য মানেই সম্পদ।’ ওরা রিসাইকেল করে, পুনর্ব্যবহার করে, গাছ লাগায়। শহরেও যেন প্রকৃতির বাস।
নরওয়ে (স্কোর: ৭০.০)
নরওয়ের প্রকৃতি কথা বলে। বিশাল পর্বত, বরফঢাকা উপত্যকা, আর স্বচ্ছ নদী, সবই যেন মানুষের ছোঁয়া ছাড়াই আপন নিয়মে বেঁচে আছে। রাজধানী অসলোও একটি ‘সবুজ শহর’ হিসেবে স্বীকৃত।
অস্ট্রিয়া (স্কোর: ৬৯.০)
এই দেশটির পরিচ্ছন্নতার মূল রহস্য লুকিয়ে আছে এর গ্রামীণ জীবনে। অস্ট্রিয়ার কৃষকেরা রাসায়নিক নয়, প্রাকৃতিক উপায়ে চাষ করেন। শহর থেকে গ্রাম, সবখানেই গাছ আর পাহাড়ের ছায়া।
গরমে বেড়াতে যাচ্ছেন? সঙ্গে রাখুন এই ৫ জিনিসগরমে বেড়াতে যাচ্ছেন? সঙ্গে রাখুন এই ৫ জিনিস
সুইজারল্যান্ড (স্কোর: ৬৮.০)
যে দেশের ট্যুরিস্ট পোস্টকার্ডেই এতটা সুন্দর লাগে, বাস্তবে সে দেশ কতটা পরিচ্ছন্ন হতে পারে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। সুইজারল্যান্ড যেন প্রকৃতির আঁকা এক নিখুঁত ছবি, নতুন রঙ লাগানোর দরকারই পড়ে না।
ডেনমার্ক (স্কোর: ৬৭.৯)
সাইকেলের রাজ্য বলা হয় ডেনমার্ককে। রাজধানী কপেনহেগেনের অফিসপাড়া থেকে বাজার, সবখানে মানুষ বাইসাইকেলে যায়। এখানকার পরিবেশনীতি শুধু কাগজে নয়, বাস্তবেও চোখে পড়ে।
এই দেশগুলো প্রমাণ করে, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশও রক্ষা করা যায়। শুধু সরকারের উদ্যোগ নয়, নাগরিকদের সচেতন অংশগ্রহণেই গড়ে ওঠে পরিচ্ছন্ন একটি দেশ।
একটা পরিচ্ছন্ন দেশ মানে শুধু ভ্রমণের স্বর্গ নয়, এটা মানে একটা পরিপাটি, প্রশান্ত, স্বাস্থ্যকর জীবন। পরিচ্ছন্নতা কেবল বাহ্যিক নয়, এটা এক ধরনের মনোভাব। এই মনোভাবই গড়ে তোলে আগামীর পৃথিবী।
দৈএনকে/জে,আ
