সুস্থ হৃদয়ের জন্য রাতের খাবার কখন? পরামর্শ দিচ্ছেন কার্ডিওলজিস্টরা


রাতের খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাতে যাওয়া আমাদের অনেকেরই অভ্যাস। ব্যস্ত দিনের শেষে রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে বিছানায় চলে যাই, এটাই যেন নিয়ম হয়ে গেছে আমাদের। তবে কার্ডিওলজিস্টদের মতে এটা একেবারেই ভালো অভ্যাস নয়। রাতের খাবার খাওয়ার পরই ঘুমাতে যাওয়া যাবে না। কার্ডিওলজিস্ট ডা. আলোক চোপড়ার মতে, ঘুমানোর কমপক্ষে তিন ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া উচিত। এ অভ্যাস শুধু হজম নয়, বরং শরীরের ডিটক্সিফিকেশন, রিকভারি ও রিস্টোরেশন প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডা. চোপড়া বলেন, ঘুম হল আমাদের শরীরের নিজেকে সারিয়ে তোলার, পুনরুদ্ধারের এবং বিশ্রামের সময়। এ সময় যেন শরীরকে অতিরিক্ত হজমের কাজ করতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
দেরিতে রাতের খাবার খাওয়ার প্রভাব: আজকাল অনেকেই রাত ১০টা বা ১১টার সময় খাবার খান এবং খাওয়ার পরপরই ঘুমাতে যান। কিন্তু এই অভ্যাস শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কারণ, ঘুমানোর সময় শরীরের শক্তি ও জ্বালানি চাহিদা সবচেয়ে কম থাকে। এ সময় শরীর তার ভেতরের কোষগুলোর মেরামত, টক্সিন অপসারণ এবং মানসিক পুনর্গঠনের কাজে ব্যস্ত থাকে।
রাতের খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লে শরীরের এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াগুলো ব্যাহত হয়। কারণ, তখন শরীরকে হজমের কাজ করতে হয় যার ফলে ডিটক্স, রেস্টোরেশন ও রিপেয়ার ঠিকমতো হয় না। ডা. চোপড়া জানান, এই অভ্যাসের ফলে শরীরের কিটোন কমে যায়, এবং গ্লাইকোজেন ভাণ্ডার নিঃশেষ হতে শুরু করে, যা পরবর্তীতে শারীরিক দুর্বলতা বা অতিরিক্ত ক্লান্তির কারণ হতে পারে।
কেন অন্তত ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করবেন: ডা. চোপড়ার মতে, খাবার গ্রহণের পর কমপক্ষে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করা উচিত ঘুমাতে যাওয়ার আগে। এটি শুধু হজমকে সহজ করে না, বরং শরীরকে গভীর ঘুমের মাধ্যমে নিজের ভিতরকার কর্মপদ্ধতি সঠিকভাবে সম্পাদনের সুযোগ দেয়। তিনি আরও বলেন, তিন ঘণ্টা যথেষ্ট হলেও, চার থেকে ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে পারলে আরও ভালো।
করণীয়
- রাতের খাবার সন্ধ্যার মধ্যেই খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
- খাওয়ার পর হালকা হাঁটাহাঁটি করুন
- একেবারে পেট ভরে না খেয়ে হালকা খাবার বেছে নিন
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে চা, কফি, ভারী খাবার ও ঠান্ডা পানীয় এড়িয়ে চলুন
রাতের খাবারের সঙ্গে ঘুমানোর যোগসূত্র রয়েছে। খাবার খেয়েই ঘুমাতে গেলে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। তাই খাবার খাওয়ার পর কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা পর ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। এই অভ্যাস আপনাকে সুস্থ এবং ফিট থাকতে সাহায্য করবে।
দৈএনকে/জে .আ
