মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj

লক্ষ্মীপুরে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক হোগলা পাতার গুড়া

লক্ষ্মীপুরে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক হোগলা পাতার গুড়া
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের হোগলা পাতা ও এ থেকে সংগৃহীত গুড়া একসময়  জনপ্রিয় একটি খাবার ছিলো। দুর্গম চরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হয় হোগলা পাতা। তা বাজারে বিক্রি করছেন লাভবান হচ্ছেন দরিদ্র কৃষক।

উপকূলীয় চরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া হোগলা পাতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। নতুন নতুন চরগুলোতে নির্বিচারে কর্তন ও অপরিকল্পিতভাবে ফসলের চাষাবাদের কারণে পাতার উৎপাদন দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে বলে কৃষি সংশ্লিষ্টদের অভিমত। অন্যদিকে সরবরাহ কমে যাওয়ায় পাতাটির দ্বারা তৈরি নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীর বাজার মূল্যও এখন চড়া।

উপজেলার উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী ও রায়পুর ইউনিয়ন ঘুরে জানা যায়, মেঘনায় নতুন নতুন জেগে উঠা চরগুলোতে ১৫/১৬ বছর পূর্বেও প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর হোগলা পাতার জন্ম হতো। চরাঞ্চলের শত শত লোক হোগলা পাতার ফুল থেকে ঝড়ানো হোগল গুড়া ও পাতা সংগ্রহ করেই জীবিকা নির্বাহ করতো। 

তবে চরের পাতার নির্দিষ্ট কোনো মালিকানা না থাকায় যে যেভাবে পেরেছে নির্বিচারে কেটে নিয়েছে। অনেকে আগুন ধরিয়ে জায়গা খালি করে সেখানে ফসলের চাষাবাদও করেছে। এছাড়াও নতুন চর না জাগার কারণে এ অঞ্চলে এখন হোগলা পাতা দুস্প্রাপ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়েকটি স্থানে টুকরো টুকরো পাতাবন দেখা গেলেও তা আগের মতো নেই।

জালিয়ার চরের কৃষক জুলহাস বলেন, এক যুগ আগেও গ্রামের প্রত্যেকের ঘরেই হোগলার কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ততা দেখা যেতো। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে মক্তব, মসজিদ, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যবহার করতো হোগলা পাতার তৈরি চাটাই (পাটি)। বিশেষ করে, গ্রামের সকল পেশার মানুষ খাওয়া, নামাজ ও ঘুমানোর কাজে এর ব্যবহার করতো বেশি। বিদ্যুৎবিহীন এলাকায় তীব্র গরমে মানুষের হোগলা পাতার হাতপাখা ছিল নিত্য দিনের সঙ্গী। পাতার সরবরাহ কমে যাওয়ায় এখন সে স্থানটি দখল করে নিচ্ছে প্লাষ্টিকের তৈরি মাদুর ও পাখা। 

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, হোগল পাতা নামক এ জলজ উদ্ভিদটি উপকূলীয় অঞ্চলে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে এটেঁল মাটিতে জন্মে। নদীর, খাল ও ঝিলের পাড়ে হালকা জলাবদ্ধ স্থানে বেশি দেখা যায়। লম্বায় প্রায় ৫ থেকে ১২ ফুট হয়। যখন এক থেকে ২ ইঞ্চি সারি সারি পাতার সমন্বয়ে বেড়ে ওঠে তখন সৃষ্টি হয় মনোমুগ্ধকর সবুজ পরিবেশ। বেড়ে ওঠার কিছুদিন পর এই জলজ উদ্ভিদের ফুলের জন্ম হয়। আর এই ফুল থেকে তৈরি হয় হলুদ রঙের এক প্রকার পাউডার যা পুষ্টিকর সুস্বাদু খাবারের উপাদান হিসোবে ব্যবহৃত হয়। যাকে স্থানীয়ভাবে ‘হোগল গুড়া’ বলা হয়। সিজনের সময়ে প্রতি কেজির মূল্য শুরুতে ২৫০ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা থাকলেও ভরপুর সময়ে তা ১০০-১৫০টাকায় বিক্রি হয়। 

রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম বলেন, হোগলা পাতার কৃষি ও অর্থনৈতিক চাহিদা আছে। এটি আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের নদী ভাঙন প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এ কারণে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ উদ্ভিদটি পরিকল্পিতভাবে চাষাবাদ করা গেলে কৃষি সেক্টরের উন্নয়নের মাইলফলকগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠতে পারে।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

A PHP Error was encountered

Severity: Core Warning

Message: PHP Startup: Unable to load dynamic library 'tidy.so' (tried: /opt/cpanel/ea-php74/root/usr/lib64/php/modules/tidy.so (libtidy.so.5: cannot open shared object file: No such file or directory), /opt/cpanel/ea-php74/root/usr/lib64/php/modules/tidy.so.so (/opt/cpanel/ea-php74/root/usr/lib64/php/modules/tidy.so.so: cannot open shared object file: No such file or directory))

Filename: Unknown

Line Number: 0

Backtrace: