শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • নির্বাচনের আগে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার নিশ্চিত করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় আসছে ওয়াকফ সম্পত্তি: ঘোষণা ধর্ম উপদেষ্টার উত্তরায় ভয়াবহ ট্রাজেডি, শোক জানাল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড মাইলস্টোন স্কুলের ছাত্র জারিফের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে গণতন্ত্রকে: মির্জা ফখরুল খাগড়াছড়িতে জেএসএস ও ইউপিডিএফের মধ্যে গোলাগুলি, নিহত ৪ ঝুঁকিহীন ও টেকসই ঋণে জোর দেবে ইউসিবি সাবেক সচিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামসুল আলম আর নেই বিমানবন্দরের ‘ফ্লাইং জোনে’ মাইলস্টোন, সরানোর সুপারিশ পরিকল্পনাবিদদের নতুন সংবিধানের জন্য আমরা রাজপথে নেমেছি : নাহিদ ইসলাম
  • যুদ্ধবিরতির জন্য ‘নমনীয়’ হয়েছে ইসরায়েল

    যুদ্ধবিরতির জন্য ‘নমনীয়’ হয়েছে ইসরায়েল
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আগের কঠোর অবস্থান থেকে ইসরায়েল কিছুটা নমনীয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও, ১৮ মার্চ ওই চুক্তি ভেঙে গাজায় ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।

    এরপর থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আবারও যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে চেষ্টা চালাতে থাকে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর। তবে দখলদার ইসরায়েল জানায় যুদ্ধবিরতির পুনর্স্থাপন করতে তাদের ১১ জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু হামাস জানায় তারা পাঁচ জিম্মিকে মুক্তি দেবে। ওই সময় দুই পক্ষের কেউই কোনো ছাড় দিতে রাজি হয়নি।

    এরমধ্যে মিসর চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। দেশটি প্রস্তাব দেয় কয়েক নতুন করে কয়েক সপ্তাহের (৪৫ দিন) যুদ্ধবিরতি হবে এবং এই সময়ে হামাস আট জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেবে। অপরদিকে জিম্মিদের বদলে দখলদার ইসরায়েল কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। যদিও যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মিসরের এই প্রস্তাবেও রাজি হচ্ছিলেন না।

    তবে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ওয়াশিংটনে বৈঠক হওয়ার পর নেতানিয়াহু নমনীয় হন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েল মিসরের কাছে তাদের পাল্টা প্রস্তাব পাঠায়। এতে ইসরায়েল জীবিত জিম্মির সংখ্যা ১১ থেকে কমিয়ে এনেছে।

    তবে দখলদার ইসরায়েল দাবি করছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যে জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। যদিও হামাস বলেছে জিম্মিদের ধাপে ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। এছাড়া ১৬ মৃত জিম্মির মরদেহ ফেরতেরও দাবি জানিয়েছে তারা।

    এছাড়া দখলদার ইসরায়েল জিম্মিদের বদলে কম ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে বলে নিজেদের প্রস্তাবে জানিয়েছে। এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল একজন জিম্মির জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন ফিলিস্তিনিকেই মুক্তি দিতে চায়।

    ইসরায়েল তাদের প্রস্তাবে আরও জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হলে গাজা থেকে তারা অবরোধ তুলে নেবে এবং সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেবে। এছাড়া গত ১৮ মার্চের আগে তাদের সেনারা গাজার যে স্থানে ছিল তাদের সেখানে সরিয়ে নেওয়া হবে। অর্থাৎ গাজার মধ্যবর্তীস্থানগুলো থেকে দখলদার সেনারা সরে যাবে। অস্থায়ী এ যুদ্ধবিরতি শুরু হলে হামাসের সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করা হবে বলেও প্রস্তাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরায়েল।

    হামাস প্রথম থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চেয়ে আসছে। এর আগে জানুয়ারিতে যে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, সেটিতে বলা ছিল এটির প্রথম ধাপ চলার সময়ই দখলদার ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা করবে। কিন্তু ওই সময় তারা বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং আলোচনা না করে উল্টো ১৮ মার্চ থেকে পবিত্র রমজান মাস চলাকালীন গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে। শুধুমাত্র ওইদিনই ইসরায়েলি হামলায় গাজায় চারশরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। যেহেতু ওই সময় বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তাই এখন ইসরায়েলের লিখিত বা মৌখিক প্রতিশ্রুতিকে পর্যাপ্ত মনে করবে না হামাস।

    হামাসের এ বিষয়টি নিয়ে আরব মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকোফ জানিয়েছেন, প্রয়োজনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে ঘোষণা দেবেন, ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা চালাবে।

    আজ শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে মিসরের রাজধানী কায়রোতে যাবেন হামাসের কর্মকর্তা খলিল আল-হায়া। তার সঙ্গে থাকবেন তার অন্য প্রতিনিধিরা। মিসর খলিল আল-হায়ার কাছে ইসরায়েলি প্রস্তাবটি পৌঁছে দেবে।

    সংশ্লিষ্ট ওই দুইজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামাস দখলদার ইসরায়েলের বেশিরভাগ দাবি মানবে না হয়ত। এ কারণে খুব শিগগিরই যুদ্ধবিরতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

    জানুয়ারিতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল এটির মেয়াদ বৃদ্ধি করতে চেয়েছিল। কিন্তু হামাস জানিয়েছিল, চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে যেতে হবে ইসরায়েলকে। আর এটি করলেই তারা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেবে। কিন্তু দখলদাররা এটি না মেনে চুক্তি ভঙ্গ করে ১৮ মার্চ থেকে ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে।

    এমনকি হামাস প্রস্তাব দেয় যদি ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় তাহলে তারা ইসরায়েলের সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিয়ে দেবে। কিন্তু নেতানিয়াহু এতে রাজি হননি। তিনি জানান, এমনটি করলে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণে থেকে যাবে। যা তারা চান না।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    আরও পড়ুন