আকাশপথের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবার সময়


চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের মাত্র ২০ মিনিট পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জরুরি অবতরণে বাধ্য হওয়া নিঃসন্দেহে এক গুরুতর সতর্কবার্তা। ওই ফ্লাইটে থাকা ২৮৭ জন যাত্রীর নিরাপদে ফেরত আসা অবশ্যই সৌভাগ্যজনক; তবে এই ঘটনা আমাদের বিমান চলাচল ব্যবস্থার নিরাপত্তা, তদারকি ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার আমরা শুনেছি বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি, মাঝআকাশে যান্ত্রিক সংকেত, অথবা অবতরণে বিলম্বের মতো ঘটনা। এই ঘটনাগুলোর প্রতিটিই মনে করিয়ে দেয়, বিমান একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল পরিবহন মাধ্যম, যেখানে সামান্যতম গাফিলতিও মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
উক্ত ঘটনায় সৌভাগ্যবশত প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি, তবে এমন ত্রুটি কেন ঘটল, ফ্লাইট ছাড়ার আগে প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা কতটা নিখুঁতভাবে হয়েছিল এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা এখন জরুরি। এতে শুধু যাত্রীদের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে না, বরং ভবিষ্যতের দুর্ঘটনাও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) উচিত একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত কারণ নিরূপণ করা এবং তার সুপারিশ অনুসারে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পাশাপাশি নিয়মিতভাবে বিমানগুলোর কারিগরি স্বাস্থ্য পরীক্ষা, প্রশিক্ষিত প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে তদারকি ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে।
বিমান যাত্রীদের জীবনের মূল্য অপরিসীম, তা শুধু আর্থিক বা বাণিজ্যিক লাভ-ক্ষতির চেয়ে অনেক বড়। তাই যাত্রীর জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গাফিলতির কোনো জায়গা নেই। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আমরা নতুন করে শিখলাম, নিরাপত্তা কখনোই আপসযোগ্য নয়। এখন সময়, আকাশপথের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আধুনিকায়ন ও স্বচ্ছতার পথে এগিয়ে নেওয়ার। একমাত্র তাহলেই আস্থা ফিরবে, আকাশপথ হবে সত্যিকার অর্থেই নিরাপদ।
