যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংসের দাম বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায়


যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংসের দাম ছুঁয়েছে সর্বোচ্চ রেকর্ড। সদ্য শেষ হওয়া মাসে দেশটিতে প্রতি পাউন্ড (প্রায় আধা কেজি) কিমার গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৬ ডলার ১২ সেন্ট, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। একই সময়ে বিফ স্টেকের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি পাউন্ডে ১১ ডলার ৪৯ সেন্ট—এক বছরের ব্যবধানে এই বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ।
দুই দশক ধরে বাড়ছে দাম
বিশেষজ্ঞদের মতে, গরুর মাংসের দাম বাড়া নতুন কিছু নয়। গত ২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে গবাদিপশুর সরবরাহ কমে যাওয়া। খরা, খাদ্যশস্যের দাম বৃদ্ধি এবং উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেক খামারি পশু পালন কমিয়ে দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্ত হয়েছে আরেকটি উদ্বেগ—মেক্সিকোতে গরুর শরীরে একটি পরজীবীর বিস্তার এবং সে দেশে আমদানির ওপর সম্ভাব্য শুল্ক আরোপ। এতে সরবরাহে আরও চাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
৭০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন গবাদিপশু সংখ্যা
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে দেশটির গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ৮ কোটি ৬৭ লাখ। যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৮ শতাংশ কম এবং ১৯৫১ সালের পর সর্বনিম্ন।
বর্তমানে বাজারে প্রতি ১০০ পাউন্ড (প্রায় ৪৫ কেজি) গরু বিক্রি হচ্ছে ২৩০ ডলারের বেশি দামে। যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
দাম কমার সম্ভাবনা খুবই কম
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে বারবিকিউ মৌসুম, যে সময়টায় গরুর মাংসের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। কানসাস স্টেট ইউনিভার্সিটির কৃষি অর্থনীতিবিদ গ্লিন টনসোর বলছেন, এই মৌসুমের চাহিদা দামের ঊর্ধ্বগতি বজায় রাখছে।
অবশ্য মাংসের দাম বাড়লেও এখনো ক্রেতারা মুরগি বা শূকরের মাংসের মতো বিকল্পে ঝুঁকছেন না। ফলে গরুর মাংসের বাজারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
গরু উৎপাদনে সময় লাগবে, দামে স্বস্তি মিলবে না এখনই
অর্থনীতিবিদ বার্ন্ট নেলসনের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে খরার প্রভাব কিছুটা কমেছে এবং চারণভূমির অবস্থা উন্নত হওয়ায় খামারিরা গরু বিক্রি না করে প্রজননের দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন। তবে একটি গরু বাজারে আনতে সময় লাগে প্রায় দুই বছর। তাই সরবরাহ বাড়লেও তার ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়তে অনেকটা সময় লাগবে।
মৌসুম শেষে সাধারণত মাংসের দাম কিছুটা কমে। তবে এবারের পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাম কমলেও তা হবে খুব সামান্য।
