নরসিংদীর পাঁচদোনা টু ডাঙ্গা চারলেন সড়ক অপরাধের হটস্পট


নরসিংদীর পাঁচদোনা থেকে ডাঙ্গা পর্যন্ত নির্মাণাধীন চারলেন সড়কটি ধীরে ধীরে অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হচ্ছে। উন্নয়ন আর আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও, এর পাশাপাশি বাড়ছে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাঁচদোনা মোড় থেকে সংযোগ সড়ক হিসেবে গ্রামের ভেতর দিয়ে সরু রাস্তাটি আগে ডাঙ্গা বাজার হয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর ঘাট পর্যন্ত গিয়েছে। নদী পার হলেই শুরু গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা সীমানা। তবে, সেই সরু রাস্তার জায়গায় এখন গড়ে উঠছে চারলেন বিশিষ্ট মহাসড়ক। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতায় যেমন সাধারণ মানুষের যাতায়াত সহজতর হয়েছে, তেমনি অপরাধীদের জন্যও এটি নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠছে।
এই সড়কে সবচেয়ে বেশি হচ্ছে ডিবি (গোয়েন্দা পুলিশ) পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে আটকের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের ঘটনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব দুষ্কৃতকারীদের চেহারা চেনা হলেও ভুক্তভোগীরা ভয়ে কোথাও অভিযোগ করতে সাহস পান না। অনেক সময়, নিরীহ পথচারী বা ব্যবসায়ীদের পথরোধ করে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী কেড়ে নেওয়া হয়।
পাঁচদোনা থেকে আমদিয়া বাজার পর্যন্ত সড়কটির পাশে রয়েছে পাঁচটি ইটভাটা। অভিযোগ রয়েছে, এই ইটভাটাগুলোও অপরাধীদের আড়াল করার জন্য ব্যবহার করা হয়। অনেক সময়, অপরাধীরা ডাকাতি বা ছিনতাইয়ের পর এসব ইটভাটায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। শুধু তাই নয়, এসব ইটভাটায় মাদক ব্যবসারও সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, এই ইটভাটাগুলোকে ঘিরে এক ধরনের অপরাধ জোন তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ইটভাটার আশপাশের এলাকায় অপরিচিত মানুষদের আনাগোনা বেড়ে যায়, যা মাদক কারবার এবং অন্যান্য অপরাধের ইঙ্গিত দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু না হওয়ায় সন্ধ্যার পর সড়কটি প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়, তখন সুযোগ বুঝে দুর্বৃত্তরা ছিনতাই, ডাকাতি ও আটক বানিজ্যের মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে।
এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, এই সড়কে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে কড়া নজরদারি বাড়ানো হোক। বিশেষ করে, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, পুলিশের টহল জোরদার এবং সন্ধ্যার পর সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন অনেকে।
নির্মাণাধীন এই চারলেন সড়কটি একদিকে যেমন উন্নয়ন ও আধুনিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে, তেমনি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে সাধারণ মানুষের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নজরুল ইসলাম বলেন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন/কাগজ/সালাহউদ্দিন/নরসিংদী
