ঈদযাত্রা: যানজট ও নিরাপত্তা নিয়ে দ্বৈত শঙ্কা


পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানী ঢাকা থেকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গগামী মানুষের ঘরমুখো স্রোত শুরু হয়ে গেছে। প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক হয়ে চলাচলরত লাখো যাত্রীর সামনে দু’টি বড় চ্যালেঞ্জ—যানজট ও নিরাপত্তা।
ঈদুল ফিতরের তুলনায় ঈদুল আজহায় যানজটের আশঙ্কা বেশি, কারণ এবার পশুবাহী ট্রাকের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে, ছুটির দিন কম থাকায় একসাথে বিপুলসংখ্যক মানুষ রওনা হবে, আর মহাসড়কের কিছু অংশে এখনো উন্নয়ন কাজ অসম্পূর্ণ। ফলে ঘরমুখো মানুষের ঈদের যাত্রা ভোগান্তিমুক্ত থাকবে—এই আশায় ফাটল ধরছে আগেভাগেই।
তবে এবারের ঈদযাত্রা আরেকটি নতুন ও উদ্বেগজনক মাত্রা পেয়েছে—রাতের মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা যাত্রীদের মনে ভীতি সৃষ্টি করেছে। রাস্তায় ছিনতাই, বাস থামিয়ে লুটপাট কিংবা সংঘবদ্ধ ডাকাতির মতো ঘটনা কোনোভাবেই ঈদের আনন্দের সঙ্গে মানানসই নয়।
পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে টহল, মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। কিছু পরিবহন কোম্পানি বাসে যাত্রীদের ছবি ও ভিডিও সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছে, যা একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। কিন্তু কেবল পরিকল্পনা থাকলেই চলবে না, এসব উদ্যোগ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন না হলে ভোগান্তি এড়ানো কঠিন।
এটা শুধু প্রশাসনের দায়িত্ব নয়, যাত্রী, পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং চালকদেরও সমান সচেতন হতে হবে। বাসে সন্দেহজনক যাত্রী উঠলে তাৎক্ষণিক জানানো, নির্ধারিত সময় মেনে গাড়ি চালানো, অপ্রয়োজনীয় স্টপেজে না থামা এবং রাতের যাত্রায় অতিরিক্ত সতর্কতা—এসব পদক্ষেপ নিতে হবে যৌথভাবে।
সরকার, সড়ক বিভাগ, এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আমাদের আহ্বান—এই ঈদযাত্রাকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে প্রতিটি কিলোমিটারে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিশ্চিত করুন। যেন পরিবারে ফেরা মানুষগুলোর যাত্রাপথ হয় নির্ভরতার, আনন্দের আর স্বস্তির।
ঈদের আনন্দ যেন রাস্তায় থেমে না যায়, এই হোক আমাদের সবার চেতনা।
