করোনা সতর্কতায় গাফিলতি নয়, চাই সচেতনতা ও প্রস্তুতি


দেশে আবারও করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত—শুধু উপসর্গযুক্ত ও জটিল রোগীদের করোনা পরীক্ষা করার বিষয়টি বাস্তবসম্মত হলেও, জনসচেতনতা ও হাসপাতাল প্রস্তুতির বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্যঝুঁকি। অতীতে এর ভয়াবহতা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তাই সামান্য অবহেলা বা গাফিলতি বড় বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে। স্বাস্থ্য মহাপরিচালক যথার্থই বলেছেন—‘আতঙ্ক নয়, সচেতনতা জরুরি’। তবে সেই সচেতনতা গড়ে তুলতে হলে সংশ্লিষ্ট সব মহলের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
বিশেষভাবে প্রশংসনীয় যে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আবারও আরটি-পিসিআর, র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছে। একইসঙ্গে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও হাসপাতালের নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিশ্চিত করার নির্দেশনাও সময়োপযোগী।
তবে প্রশ্ন থেকে যায়: আমরা কি সত্যিই পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি? করোনার প্রথম ধাক্কার পর থেকেই আমাদের শিক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। অক্সিজেন সংকট, আইসিইউ সঙ্কট কিংবা টিকার ঘাটতি যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে নতুন ভ্যারিয়েন্টের আশঙ্কা যেমন এক বাস্তব হুমকি, তেমনি দেশের জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি পালনের অনীহা, মাস্ক ব্যবহারে উদাসীনতা বা গণপরিবহনে গা-ঘেঁষে চলাফেরা—এসবও সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এসব বিষয়ে নজরদারি জোরদার করতে হবে।
আমাদের প্রত্যাশা, সরকার কেবল মুখে নয়, বাস্তব প্রস্তুতি গ্রহণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। করোনা মোকাবিলায় অতীতে আমরা যে সাফল্য দেখিয়েছি, তা ধরে রাখতে হলে এখনই সময় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের।
পরিশেষে, জনগণের উদ্দেশে একটাই বার্তা—সতর্ক হোন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন এবং দায়িত্বশীল আচরণ করুন। এই লড়াই শুধু সরকারের নয়, আমাদের সবার।
